বাড়িভাড়াসহ বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা আজ মঙ্গলবার ‘মুখে কালো কাপড় বেঁধে’ রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ ও মিছিল করবেন।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় শহীদ মিনারে নবম দিনের অবস্থান থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মুখে কালো কাপড় বেঁধে শাহবাগে অবস্থান নেব, বিক্ষোভ করে চলে আসব। এটা একটা মিছিল হবে, আমরা ওখানে বেশিক্ষণ স্টে করব না। আমরা জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রাখব। আমরা চাচ্ছি আমাদের কর্মসূচিগুলো শান্তিপূর্ণ করতে। আর যে শিক্ষক–কর্মচারীরা শহীদ মিনারে আসতে পারছেন না, তারা প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে ১২টায় জেলা ও উপজেলা সদরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। খবর বিডিনিউজের। এদিকে আন্দোলন কারীদের মধ্যে যারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনে রয়েছেন, গতকাল বিকাল পর্যন্ত তাদের চারজন অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। সদস্য সচিব বলেন, আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ আমরণ অনশনের মাধ্যমে যদি কোনো প্রাণহানি ঘটে, এর দায় দায়িত্ব শিক্ষা উপদেষ্টাকে নিতে হবে।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ নির্ধারণের দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে গত ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন চালাচ্ছেন শিক্ষক–কর্মচারীরা। গত ১৭ অক্টোবর তারা সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিও যুক্ত করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টির–এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ইতোমধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ–ডাকসু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ–জাকসুসহ বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়–বুয়েটের শিক্ষার্থীরাও শিক্ষক–কর্মচারীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা প্রথম দফায় ৫০০ টাকা বাড়িয়েছিল সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেন। এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আন্দোলনের মধ্যেই ১৯ অক্টোবর মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা নির্ধারণ করা হয় শিক্ষক–কর্মচারীদের জন্য। তবে শিক্ষক–কর্মচারীরা নিজেদের দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা দুই দফায় বাড়িয়ে নূন্যতম ২ হাজার টাকা করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শাতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।