সর্বশেষ ২০০২ সালে ৫ম বার বিশ্বকাপ জিতে রেকর্ড গড়েছিল ব্রাজিল। এরপর পেরিয়ে গেছে ২০ বছর। কিন্তু হেক্সা জেতা হয়নি ব্রাজিলের। অথচ বরাবরই ফেভারিট হিসেবে বিশ্বমঞ্চে এসেছে সেলেসাওরা। এবারেও কাতার বিশ্বকাপে টপ ফেভারিট ব্রাজিল। ২০ বছরের শিরোপা খরা কাটাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে ব্রাজিল কোচ তিতে।
ব্রাজিলের হেক্সা জয়ের মিশনে প্রথম প্রতিপক্ষ সার্বিয়া। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় লুসাইল স্টেডিয়ামে ম্যাচ দিয়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা কাতারে তাদের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করবে। দলে রয়েছে একঝাঁক তরুণ প্রতিভা। সাথে রয়েছে থিয়াড়ো সিলভা আর দানি আলভেসের মত অভিজ্ঞ ফুটবলারও। যদিও দলের ১৬ জন খেলোয়াড়েরই আগে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা নেই। দারুণ প্রতিভাবান এই নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রডরিগো, রাফিনহা, এডার মিলিটাও, বুনো গুইমারায়েস, এন্টনির মত তরুণরা। ইউরোপ জুড়ে এলিট ক্লাবগুলোতে খেলে ইতোমধ্যেই যারা প্রতিভার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্বকাপ মঞ্চে এসেছে। আর এই তরুণদের সবার নেতা হয়ে আছেন সুপারস্টার নেইমার।
গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে হারের পর থেকে এ পর্যন্ত ৫০ ম্যাচে ৩৭টি জয় উপহার দিয়েছে ব্রাজিলকে এই তরুণ দলটি। এই সময়ের মধ্যে ব্রাজিল কেবলমাত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পরাজিত হয়েছে। আর সেটি হচ্ছে ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে। তাই গত চার বছরের ঘাম ঝরানো প্রস্তুতির আসল পরীক্ষাটা দিতে চায় ব্রাজিল আজ থেকে।
১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ থেকে সবকটি বিশ্বকাপ খেলা একমাত্র দল ব্রাজিল। এবারের বাছাইর্বে ১৭ ম্যাচে ১৪ জয়সহ ৪৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে ব্রাজিল, যা একটি রেকর্ড। বাছাইপর্বে কোনো ম্যাচেই কেউ সেলেসাওদের পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। ১৯৯৮ সালে নরওয়ের কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হবার পর এ পর্যন্ত বিশ্বকাপে চূড়ান্ত পর্বে গ্রুপ ম্যাচে পরাজিত হয়নি ব্রাজিল। এনিয়ে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে টানা ১৫ ম্যাচে তারা অপরাজিত রয়েছে। চার বছর আগে বেলজিয়ামের বিপক্ষে শেষ আটের পরাজয় থেকে এবার আরো সামনে এগুতে বদ্ধপরিকর নেইমার, রডরিগো, ভিনিসিয়াসরা।
এর আগে সার্বিয়ার বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেললেও দুটিতেই জিতেছে ব্রাজিল। চার বছর আগের বিশ্বকাপেও গ্রুপ পর্বে এই সার্বিয়ার মোকাবেলা করেছিল ব্রাজিল। আর সে ম্যাচটি সেলেসাওরা জিতেছিল ২-০ ব্যবধানে। ২০১৪ সালে আরেকটি প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিল ১-০ গোলে হারিয়েছিল সার্বিয়াকে।
এদিকে ১৯৯০ সালে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর আগের তিন বিশ্বকাপেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছে সার্বিয়াকে। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে খেলার স্বপ্ন নিয়েই কাতারে এসেছে সার্বিয়ানরা। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ২৫তম স্থানে থাকা ‘দ্য ঈগলস’ উয়েফা বাছাইপর্বে আট ম্যাচে ছয় জয় ও দুটিতে ড্র নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবেই কাতারের টিকিট পেয়েছে। এর মধ্যে শেষ ম্যাচে পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল সার্বিয়া।
শেষ ১৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে তারা মাত্র দুটিতে পরাজিত হয়েছে। ইউরোপীয়ান আসরের কৃতিত্ব এখন বৈশ্বিক সর্বোচ্চ মঞ্চে প্রমাণ করাই স্টোকোভিচের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ। এর আগে কখনই ব্রাজিলের মত টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপ শুরু করেনি সার্বিয়া। যে কারণে ম্যাচের আগে মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকাটাও দলের জন্য এই মুহূর্তে খুবই জরুরি। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে শেষ ৯টি ম্যাচের সাতটিতেই পরাজিত হয়েছে সার্বিয়া। এখন দেখার বিষয় আসল লড়াইয়ে ব্রাজিলের বিপক্ষে কেমন করে সার্বিয়া।