আজ থেকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ ইস্যু করবেন তিন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা

চসিকের ১৪টি ওয়ার্ড

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) পৃথক ১৪টি ওয়ার্ডে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ ইস্যু করবেন সংস্থাটির তিনজন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা। ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলর অনুপস্থিত রয়েছেন। তাই এসব ওয়ার্ডে গতকাল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের ‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক’ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার থেকে তারা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ ইস্যু করবেন।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের ‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক’ এর দায়িত্ব বণ্টন করে গতকাল অফিস আদেশ জারি করেন চসিকের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন। এ আদেশ অনুযায়ী, চসিকের ১ ও ৫ নম্বর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ৭, , ১১, ১৩ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ২ ও ৩ নম্বর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিন ফেরদৌসী ৪, , ১৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের এবং ৪ ও ৬ নম্বর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা রক্তিম চৌধুরী ১৫, ২১, ২৩, ২৫ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চসিকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চসিকের ৩৯ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস করছেন না। নিয়মিত অফিস করেন ৯ জন এবং ৭ জন অনিয়মিত অফিস করেন। প্রসঙ্গত, চসিকে ওয়ার্ড আছে ৪১টি। এত ৪১ জন সাধারণ এবং ১৫ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর আছেন। সবমিলিয়ে কাউন্সিলর আছেন ৫৫ জন।

চসিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিপুল সংখ্যক কাউন্সিলর অনুপস্থিত। বিপরীতে ১৪টি ওয়ার্ডে ‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক’ এর দায়িত্ব দেয়া হয়। ফলে বাকি ওয়ার্ডগুলোর কি হবে সেই প্রশ্ন ওঠেছে। এ বিষয়ে চসিকের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন আজাদীকে বলেন, যেসব ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা শতভাগ অনুপস্থিত আছেন ওসব ওয়ার্ডেই কেবল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বাকি ওয়ার্ডগুলোতে কিন্তু জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনলাইনে দেয়া হচ্ছে। এরপরও কোনো ওয়ার্ডে যদি কাউন্সিলরের অনুপস্থিতির কারণে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ পেতে সমস্যা হয় সেখানেও আমরা দায়িত্ব বণ্টন করব। এর আগে মন্ত্রণালয়ে অনুপস্থিত কাউন্সিলরদের তালিকা প্রেরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কারা অফিস করছেন না সেই তালিকা পাঠানো হয়েছিল। তখন তো নানা কারণে অফিস করেন নি। অনেক অফিসে তো বসার জায়গাও ছিল না। তবে তারা অনলাইনে সনদ দেয়।

এদিকে গত ৮ সেপ্টেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপনে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ধারা ১১৭ () অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন সমূহের প্রশাসকগণকে সিটি কর্পোরেশন অধিক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের নাগরিক সেবা বিশেষ করে জাতীয়তা ও চারিত্রিক সনদ, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার সনদ ইত্যাদি প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। অর্থাৎ সিটি কর্পোরেশন (কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরণের দায়িত্ব, কার্যাবলী ও সুযোগসুবিধা) বিধিমালা, ২০১২ এর উপবিধি ৩ () অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরগণ মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার, জাতীয়তা ও চারিত্রিক সনদ প্রদানের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন।

এছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে সিটি কর্পোরেশনের কোন কাউন্সিলর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে বা কোনো কাউন্সিলরকে কর্মস্থলে পাওয়া না গেলে নিরবচ্ছিন্ন নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণে জনস্বার্থে প্রশাসক তাঁর উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বা অন্য কোনো কর্মকর্তাকে বা ক্ষেত্র বিশেষে ‘স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ এর ধারা ৩ দ্বারা সন্নিবেশিত ধারা ২৫ ক () অনুযায়ী নিযুক্ত কমিটির সদস্যদেরকে এ ক্ষমতা প্রদান করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চসিকের সাবেক কাউন্সিলররা দাবি করেন, সরকার পতনের পর চসিকের বেশিরভাগ কাউন্সিলর আত্মগোপনে থাকায় নাগরিকরা বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতিতে জন্মমৃত্যু, ওয়ারিশ সনদ, নাগরিক সনদপত্রসহ বিভিন্ন সেবা পাচ্ছেন না। নাগরিক সেবা নিশ্চিতে যেসব কাউন্সিলর অনুপস্থিত রয়েছেন তাদের বিষয়ে তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেয়ারও আহবান জানান তারা। এ দাবির পরদিনই আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করা হল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজ শুরু হচ্ছে প্রথম টেস্ট, ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের শঙ্কা, শনি-রবি হতে পারে বৃষ্টি রাতে নগরে ভারী বৃষ্টিপাত