চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার প্রচারণা শুরু করতে যাচ্ছেন। তাদের প্রচারণায় জমে উঠবে ভোটের মাঠ। সরব হয়ে উঠবে নগরী। গত বছরের মার্চে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পর করোনা মহামারীর কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। প্রায় ১০ মাস পর আজ পুরোদমে ভোটের মাঠে নামছেন ৭ মেয়র ও ২৩৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। প্রার্থীরা প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত একটানা প্রচারণা চালাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর তারা আনুষ্ঠানিক প্রচার কার্যক্রম শুরু করবেন। করোনাকালীন সময়ে যতদূর সম্ভব মাস্ক পরে, সামাজিক দূরত্ব মেনে দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা দোয়া নিতে শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভোট। নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বিএনপি মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের মধ্যে। তবে অধিকাংশ ওয়ার্ডে বিদ্রেহী প্রার্থী থাকায় জটিল হয়ে পড়েছে কাউন্সিলর পদে ভোটের হিসাব-নিকাশ। তবে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণার আগেই নির্বাচনে মূল দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থীর মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ভোটের লড়াই। মূলত মেয়র পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের দুই মেয়র প্রার্থী করোনাকালীন সময়ে নতুন কৌশল নিয়ে প্রচারে নামার পরিকল্পনা করছেন। এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে দুই দল থেকেই নতুন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা) ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ)। ভোটের মাঠে দুজনেরই প্রতিপক্ষ হিসেবে নতুন। গত বছরের মার্চ মাসে চসিক নির্বাচনের মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। গত বছরের ২৯ মার্চ ভোট গ্রহণের তারিখ ছিল। কিন্তু করোনা মহামারী আকার ধারণ করায় ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। প্রায় ১০ মাস পর স্থগিতকৃত এই নির্বাচন আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, প্রার্থীরা প্রচারনার ক্ষেত্রে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মাইক চালাতে পারবেন। গণসংযোগ শুরুর প্রাক্কালে গতকাল আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি আজাদীকে জানান, আমরা চাই সবাই সুস্থ থাকুক। এই করোনাকালীন সময়ে আমরা মাস্ক পড়ে-সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যতটুকু সম্ভব নির্বাচনী প্রচারণা-গণসংযোগ চালাব। তিনি বলেন, নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির প্রতীক। নৌকা মার্কায় চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। আপনারা আমার সাথে থাকবেন, পাশে থাকবেন।
এদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনও আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করবেন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবার ৭৩৫টি ভোট কেন্দ্র ও ৪ হাজার ৮৮৬টি বুথে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মোট ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ৯ লাখ৯২ হাজার৩৩ জন পুরুষ এবং ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩জন মহিলা ভোটার।