আজ জিতলে আরেকটি ইতিহাস নারী ফুটবলারদের

এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাই

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ১০ আগস্ট, ২০২৫ at ১২:১১ অপরাহ্ণ

মাত্র কিছুদিন হলো এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। এরপর অনূর্ধ্ব২০ নারী দল দেশের মাটিতে জিতেছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি। এরপর বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পায়নি নারীরা। কারণ তাদেরকে যে আরো বড় একটি মিশনে যেতে হয়েছে। আজ সে মিশনের পূর্ণতা পাওয়ার দিন। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে আর মাত্র এক ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব২০ নারী ফুটবল দল। লাওসে চলমান এএফসি অনূর্ধ্ব২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে আজ মুখোমুখি হবে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়ার। এই ম্যাচে জয় নয়, এমনকি ড্র করলেই প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের মূলপর্বে জায়গা করে নিয়ে ইতিহাস গড়বে লালসবুজের তরুণীরা। তবে হারলেও আশা শেষ হয়ে যাবে না। অন্য গ্রুপগুলোর রানার্সআপদের মধ্যে অন্যতম সেরা হলে তখনো সুযোগ থাকবে মূলপর্বে ওঠার। তবু পিটার বাটলারের শিষ্যদের লক্ষ্য স্পষ্ট। পয়েন্ট নিয়ে সরাসরি ভাগ্য নিশ্চিত করা।

সামপ্রতিক সময়ে বাংলাদেশের নারী ফুটবলে সাফল্যের ধারাবাহিকতা চোখে পড়ার মতো। গত মাসে মিয়ানমারে সিনিয়র নারী দলের ঐতিহাসিক জয় এখনো টাটকা স্মৃতিতে। শক্তিশালী স্বাগতিকদের ২১ গোলে হারিয়ে মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছিল তারা। এবার অনূর্ধ্ব২০ দলও চাইছে সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে। তবে প্রতিপক্ষ যখন দক্ষিণ কোরিয়া, লড়াইটা যে সহজ হবে না তা ভালো করেই জানেন প্রধান কোচ বাটলার। তার মতে, এএফসির মঞ্চ সাফ টুর্নামেন্টের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ফলাফল যাই হোক, দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি হবে তরুণীদের জন্য বড় এক শেখার সুযোগ। কারণ সচরাচর এমন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খুব একটা খেলার সুযোগ পায়না বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচের আগের দিন গতকাল শনিবার বাটলার খেলোয়াড়দের চাপমুক্ত রাখতে মাঠের অনুশীলন না করিয়ে রাখেন রিকভারি সেশন। খেলোয়াড়রা অংশ নেন হালকা স্ট্রেচিং, জিম ও পুল সেশনে। যারা এখনো ম্যাচ টাইম পাননি, তাদের জন্য ছিল আলাদা প্রশিক্ষণ। শেষে দলীয় বৈঠকে শেষ মুহূর্তের নির্দেশনা দেন কোচ।

সহকারী কোচ মাহমুদা আক্তার অনন্যা জানিয়েছেন, খেলোয়াড়রা মানসিকভাবে প্রস্তুত এবং আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন প্রথম দুটি ম্যাচেই আমরা ভালো খেলেছি। দক্ষিণ কোরিয়া শক্তিশালী হলেও আমরা আশাবাদী যে ভালো কিছু করতে পারব। দেশবাসীর দোয়া ও সমর্থন আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। গ্রুপে এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে হারিয়েছে ৩১ গোলে। অথচ র‌্যাংকিংয়ে লাওস বাংলাদেশের চাইতে ২৮ ধাপ এগিয়ে ছিল। সে লাওসকে দুর্দান্তভাবে হারিয়েছে আফাঈদার দল। আর দ্বিতীয় ম্যাচে তিমুর লেস্তেকেতো রীতিমত উড়িয়ে দিয়েছে ৮০ গোলে। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষের ম্যাচটি শুধু আরেকটি জয় নয় বরং দেশের ফুটবল ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়ে উঠতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকা বাছাই পর্বের এই গ্রুপে সবচাইতে শক্তিশালী এবং ফেবারিট। তাই বলে হাল ছাড়তে নারাজ বাংলাদেশ দলের কোচ। তিনি বলেন আমার খেলোয়াড়রা নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত। তারাও চাইছে এই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে। আগের ম্যাচগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে আজই নারী ফুটবলে আরেকটি ইতিহাস রচনা করতে পারবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতালিকায় নেই বাংলাদেশের লিগ বিপিএল
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম জেলা দাবা চ্যাম্পিয়নশীপ ৪র্থ রাউন্ড শেষে ৫ জন শীর্ষে