চট্টগ্রাম জেলায় চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে আরো ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ ঘর দেয়া হবে। আনোয়ারা ও হাটহাজারীকে হালনাগাদ যাচাই–বাছাই করে তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন। গতকাল নগরীর সার্কিট হাউসে আয়োজিত এ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মাসুদ কামালসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক চট্টগ্রাম জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন (৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপ) ২৪৪টি পরিবারকে জমিসহ ঘরের মালিকানা হস্তান্তর করা হবে। এতো সংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে জমিসহ ঘর দেয়ার নজির পৃথবীর আর কোথাও নেই। ‘মুজিব শতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ–২ প্রকল্পের অধীনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১ম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সারাদেশে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে ১ হাজার ৪৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ২য় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন সারাদেশে ৫৩ হাজার ৩৩০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেয়া হয়েছে। ২য় পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ১ম ও ২য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ৩য় পর্যায়ে গত বছরের ২৬ এপ্রিলে সারাদেশে ৩২ হাজার ৯০৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ১ হাজার ২১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে একই বছর ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ৩য় পর্যায়ে (২য় ধাপ) ২৬ হাজার ২২৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ২য় পর্যায়ে (২য় ধাপ) ৫৮৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার ৮টি উপজেলা পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া, বোয়ালখালী, রাউজান উপজেলাকে হালনাগাদ যাচাই–বাছাইকৃত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ১ম, ২য় এবং ৩য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ৪র্থ পর্যায়ে ২য় ধাপে ৯ আগস্ট (আজ বুধবার) সারাদেশে ২২ হাজার ১০১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ১৫৯টি এবং ৪র্থ পর্যায়ের ৮৯৩টিসহ মোট ১ হাজার ৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেয়া হয়। চতুর্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর দেবেন। এরই মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রামের আরো দুই উপজেলা আনোয়ারা ও হাটহাজারীকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন।