এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল সবশেষ ম্যাচটি খেলেছে গত শুক্রবার চেন্নাইতে। পরদিন শনিবার চেন্নাই থেকে পুনেতে চলে আসে বাংলাদেশ দল। এরপর থেকেই পুরো বিশ্রামে টাইগাররা। আর তিন দিনের সে বিশ্রাম শেষ হয়েছে গতকাল। আগের দুই দিন দলের পক্ষ থেকে কেউই সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলেননি। উল্টো গত রোববার লিটন দাশের সাথে সবংবাদিকদের অনাকাংখিত একটি ঘটনাও ঘটে গিয়েছিল। তবে তিন দিনের বিশ্রামের শেষ দিনে গতকাল সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। তবে বিসিবির এই কর্তা বাংলাদেশ দলকে নিয়ে খুশি হওয়ার মত কোন কথা শোনাতে পারলেন না। এবারের বিশ্বকাপের শুরু থেইে দলের ব্যাটিংটা বেশ ভোগাচ্ছে দলকে। বিশেষ করে টপ অর্ডারের ব্যাটাররা পারছেন না তাদের কাজটা করে দেখাতে। দলের খাতায় ৩০/৪০ রান যোগ হতেই হারাতে হচ্ছে ৩/৪ উইকেট। বিশেষ করে দলের ওপেনিং জুটি নিয়ে যেন হতাশাটা কাটছেই না। এ অবস্থায় এই ব্যাটিং নিয়ে খুব বেশি আশাবাদিও হতে চান না সুজন। তবে তিনি মনে করেন দল ফিরবে ছন্দে। তামিম ইকবাল দলে না থাকায় ওপেনিং জুিটটা মোটেও স্থায়ী হতে পারছে না। তামিম থাকলে এক পাশ নিয়ে চিন্তা করতে হতো না টিম ম্যানেজম্যান্টকে। এখন লিটন দাশ ওপেন করলেও তার অপর পাশে তেমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। তরুন তানজিদ তামিম, নাজমুল হোসেন শান্তর মত ওপেনার থাকলেও তারা ওপেনিংয়ে ভাল করতে পারছেন না। ফলে মেহেদী হাসান মিরাজকে কথনো ওপেনিংয়ে, আবার কখনো তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানো হচ্ছে। অথচ এসব পজিশন তার না। যদিও তিনি বেশ কিছুদিন ধরে সে সব পজিশনে ভাল করছেন। কিন্তু সুজন মনে করছেন শুরুর দিকের ব্যাটারদের জায়গা গুলো ঠিক হওয়া উচিত। কারন দলের মুল স্তম্ভ তারাই। যদিও তার মতে দলের ব্যাটিংয়ের অন্যান্য পজিশন গুলো নিয়ে তেমন কোন চিন্তা নেই। শান্ত, সাকিব, মুশফিক, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ সবাই যার যার অবস্থানে ভাল আছে। নেই কেবল ওপেনাররা। তবে তিনি মনে করেন এই সমস্য খুব তাড়াতাড়ি সমাধান না হলেও তারা চেষ্টা করছেন কিভাবে ওপেনিং জুটিটা একটু লম্বা করা যায়।
যদিও মাঠে খেলার দায়িত্বটা খেলোয়াড়দেরই। তবে টিম ম্যানেজম্যান্ট নানাভাবে চেষ্টা করছেন দলকে চাঙ্গা করে তোলার। তিন দিনের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। খেলোয়াড়দের নিয়ে একসাথে লাঞ্চ কিংবা ডিনার করা হচ্ছে। সবার সাথে বসে আলোচনা করা হচ্ছে। পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। কিভাবে এই সমস্যাটা কাটিয়ে উঠা যায়। তবে দিন শেষে মাঠেইতো খেলোয়াড়দের খেলতে হবে। সেটাতো আর টিম ম্যানেজম্যান্ট করে দিয়ে আসতে পারবে না। খালেদ মাহমুদ মনে করছেন ভারতের বিপক্ষে অন্তত ছন্দে ফিরবে ক্রিকেটারার। তারা নিশ্চয়ই তাদের সামর্থ্য এবং তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন আছে। তবে এটা ঠিক তারা দায়িত্বটা ঠিকমত সম্পাদন করতে পারছেনা। এখনো অনেক ম্যাচ বাকি। এত তাড়াতাড়ি হতাশ হওয়ার কিছু নেই। একটি কিংবা দুটি ম্যাচ জিততে পারলেই সবকিছু আবার ছন্দে ফিরে আসবে। সেই একটি কিংবা দুটি ম্যাচ জেতা কি আদৌ সম্ভব বাংলাদেশ দলের পক্ষে? কারন পরের ম্যাচটা ভারতের পক্ষে। তারা খেলছে একরকম দানবীয় ক্রিকেট। এরপর আরেক ইনফর্ম দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ। তবে ক্রিকেট বলেই হয়তো সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। আগের দিন আফগানিস্তান যেমন উড়িয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ডকে। তাই ক্রিকেটে যেকোন কিছুই হতে পারে।
তবে আপাতত বাংলাদেশ দল তাদের ব্যাটিং নিয়ে চিন্তিত। তাও আবার দলের টপ অর্ডারের ব্যাটিং নিয়ে। কারন এরাইতো দলের ইনিংসের ভিত গড়ে দেবে। আজ থেকে শুরু হওয়া অনুশীলনে টপ অর্ডারের ব্যাটারদের নিয়ে কাজটা নিশ্চয়ই বেশি করে করবে বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজম্যান্ট। দলের কোচ থেকে শুরু করে সব কোচিং স্টাফের একটাই চিন্তা কিভাবে টপ অর্ডারের ব্যাটারদের রানে ফেরানো যায়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা বাংলাদেশ দল হোঁচট খায় দ্বিতীয় ম্যাচেই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরে বসে টাইগাররা। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আবারো হার। এই ম্যাচে ২৪৫ রান করলেও সেখানে ছিলনা টপ অর্ডার ব্যাটারদের কোন অবদান। আর তাই এবার হতাশা ঝেড়ে নতুন উদ্যমে পথ চলা শুরু করতে চায় বাংলাদেশ দল। হোকনা পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ প্রতাপশালী ভারত।