সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) যে আবেদন করেছেন, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। ওই আবেদন নিয়ে বৃহস্পতিবার কমিশন বৈঠক করেছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য নেওয়া হবে কি না তা জানতে আরো দুয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘অভিযোগটি যাচাই বাছাই করার নির্দেশনা দিয়ে যাচাই বাছাই কমিটির (যাবাক) কাছে পাঠানো হয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যে এ বিষয়ের সিদ্ধান্ত জানা যাবে।’ সালাহ উদ্দিন রিগ্যান নামের ওই আইনজীবী বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠান। খবর বিডিনিউজের।
সেখানে বলা হয়, ‘আজিজ আহম্মেদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এতে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। দেশের সাধারণ জনগণের সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ন করেছে।’
এ আইনজীবী বলছেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন এত বড় অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পরও অনুসন্ধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি; এটি দুদকের নিষ্ক্রিয়তা।’ অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তিনি (আজিজ) ভুয়া তথ্য দিয়ে ই পাসপোর্ট করতে সহায়তা করেছেন এবং জাল এনআইডি তৈরি করতে প্রভাব বিস্তার করেছেন। আমরা বলছি না যে উনি দুর্নীতি করেছেন কী করেননি। বলেছি বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হউক আসলে ঘটনা কী। তখন সত্যিটা বেরিয়ে আসবে।’
দুদক কোনো ব্যবস্থা না নিলে হাই কোর্টে রিট আবেদন করবেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়ে রেখেছেন রিগ্যান।
২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর বাংলাদেশের চিফ অব আর্মি স্টাফ ছিলেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। তার আগে ২০১২ সাল থেকে চার বছর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির নেতৃত্ব দেন।
গত ২০ মে এক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জেনারেল আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়ে বলা হয়, দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণভাবে ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য’ বিবেচিত হবেন।
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির ওই অভিযোগ ‘অসত্য’ বলে পরদিন দাবি করেন আজিজ আহমেদ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধান হিসেবে বা সেনাপ্রধান হিসেবে তিনি কোনো দুর্নীতি করেছেন– এমন প্রমাণ করতে পারলে ‘যে কোনো পরিণতি’ তিনি মেনে নেবেন।