আজিজের ভাইদের ‘এনআইডি জালিয়াতি’ : তদন্তে আরও দুই সপ্তাহ

| বৃহস্পতিবার , ২৭ জুন, ২০২৪ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের দুই ভাই ও বঙ্গবন্ধুর খুনি রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের চার ছেলে মেয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন পেতে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বুধবার কয়েকটি পৌরসভার ভোট শেষে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন কমিশন সচিব শফিউল আজিম। খবর বিডিনিউজের। অসত্য তথ্য দিয়ে সাবেক সেনা প্রধানের ভাইদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহের বিষয়টি তদন্তে যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে কমিটি হয়েছে। এই কমিটির তদন্তের বিষয়ে, নির্বাচন কমিশন সচিব জানান, তারা কীভাবে ভোটার হয়েছিলেন, কোন কোন নথি এসেছে, এসব ঘটনায় কারও সম্পৃক্ততা ছিল কি না, তার আদ্যোপান্ত তদন্ত চলছে। ‘তদন্ত কমিটি আরও সময় চেয়েছে। আরও সময় লাগতে পারে। আমরা নির্ভুলভাবে বিস্তারিত ও নিখুঁতভাবে তদন্তটা করতে চাই, কোনো ফাঁক ফোকর যাতে না থাকে। তদন্ত কমিটির ওপর আস্থা আছে, তারা কাজ করছে। আরও একটু অপেক্ষা করতে হবে’, বলেন তিনি।

গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ (জোসেফ) নিজেদের নামের পাশাপাশি বাবামার নামও পরিবর্তন করেছেন।

হারিছ আহমেদ তার নাম পাল্টে হয়েছেন মোহাম্মদ হাসান। আর তোফায়েল আহমেদ জোসেফ নাম পাল্টে পরিচিতি নিয়েছেন তানভীর আহমেদ তানজীল। তাদের এনআইডির তথ্য পরিবর্তনে আজিজ আহমেদ সুপারিশ করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজিজ আহমেদের ভাই হারিছ আহমেদের স্ত্রী দিলারা হাসান ও তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফের স্ত্রী শামীম আরা খানও ভুয়া তথ্য দিয়ে ই পাসপোর্ট নিয়েছেন বলেও তথ্য এসেছে গণমাধ্যমে।

এর মধ্যে গত ৩০ মে প্রকাশ পায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পলাতক আসামি রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের চার ছেলে মেয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) তাদের বাবার নাম পাল্টেছেন। ‘ভুয়া’ পরিচয়পত্র ব্যবহার করে তিন ছেলেমেয়ে পাসপোর্ট এবং এক ছেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছেন। গত ১০ জুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজিজ সাহেবের ভাই বোন, হারিছ চৌধুরী (খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তার রাজনৈতিক সচিব), বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেম উদ্দিনের পরিবার ভুল তথ্য দিয়ে এনআইডি করেছে জেনেছি। ২০২৫ বছর পর হঠাৎ জানা গেল। এখন দুটো তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।’

সিইসির বক্তব্যের পরও পেরিয়ে গেছে দুই সপ্তাহ। কিন্তু প্রতিবেদন জমা পড়েনি।

নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে। তারা আরও দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলেছে। ভোটার হওয়া থেকে এ পর্যন্ত সব ডকুমেন্ট জোগাড় করা, পরীক্ষা করা, যাচাই করা এবং বৈজ্ঞানিকভাবে যাতে কোনো খুঁত না থাকে।

কেউ সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয় জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্তে প্রমাণিত হবে। বিন্দুমাত্র ইনভল্‌ভমেন্ট থাকলে তার আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে।

বঙ্গবন্ধুর খুনির সন্তান প্রসঙ্গ : বঙ্গবন্ধুর খুনি রিসালদার মোসলেম উদ্দিন নানা নামে আত্মগোপনে ছিলেন জানিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, ‘তিনি বিভিন্ন নাম ধারণ করেছেন বলে ইসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। কোন কোন নামে কোথায় কোথায় ছিলেন, তার আত্মীয় স্বজনরা কোথায় কোথায় ব্যবহার করেছেন, সমস্ত তথ্য নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এটিও একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত হচ্ছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা তদন্ত করছি।’

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মোসলেম উদ্দিনসহ এখনও পলাতক পাঁচজন।

সমপ্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইসিকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মোসলেম উদ্দিনের ছয় ছেলেমেয়ে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবার নাম পরিবর্তন করে মো. রফিকুল ইসলাম খান বানিয়ে নিয়েছেন। ‘ভুয়া’ পরিচয়পত্র ব্যবহার করে মোসলেম উদ্দিনের তিন ছেলেমেয়ে পাসপোর্ট এবং এক ছেলে ড্রাইভিং লাইসেন্সেও তাদের বাবার নাম মো. রফিকুল ইসলাম খান অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, দুটি তদন্তই চলমান রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালী গার্লস কলেজে বিদায় সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধডাকাত-ছিনতাইচক্রের হোতাসহ ৫ সদস্য আটক চকরিয়ায়