দৈনিক আজাদীর সাবেক সহকারী সম্পাদক, কলামিস্ট ও গবেষক মো. মাহবুব উল আলম আর নেই। গতকাল সোমবার দুপুর ২টা নাগাদ তিনি নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি দুই মেয়ে, এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। মরহুমের পুত্র জিবরান উল আলম জানিয়েছেন, আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে প্রথম এবং বাদ জোহর হাটহাজারীর ২ নং ধলই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আবদুস সোবহান কেরানি বাড়িতে মরহুমের দ্বিতীয় নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নির্লোভ ও নিরহংকারী মো. মাহবুব উল আলম ১৯৫০ এর দশকে ছাত্রাবস্থায় মওলানা ভাসানীর সাম্রাজ্যবাদ–ঔপনিবেশবাদ–সামন্তবাদ বিরোধী রাজনীতিতে দীক্ষিত হন। দৈনিক আজাদীতে যোগদানের মাধ্যমে পেশাদার সাংবাদিকতায় প্রবেশ করেন। মওলানা ভাসানী প্রকাশিত সাপ্তাহিক হক কথার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সাহিত্যের নানা শাখায় ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতার চাষী, ইতিহাসের দলিল : কল্লোলিত জনসমুদ্রে মওলানা ভাসানী, ছন্দের নাম বুলেট, আদর্শের চেয়ে মানুষ বড়ো, অভেদম, স্বাধীনতার কাছে স্মারকলিপি ইত্যাদি। সাংবাদিক মো. মাহবুব উল আলম ‘লোকে বলে, বলে রে’ শিরোনামে দৈনিক আজাদীতে দীর্ঘ সময় ধরে কলাম লিখেছেন। ফাগুন এলেই ‘ফাগুনের পদাবলী’ লিখতেন দৈনিক আজাদীতে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন সংবাদপত্রে কলাম, প্রবন্ধ লিখেছেন। অত্যন্ত বিনয়ী ও সাধাসিধে জীবন ছিল তাঁর। মাইজভাণ্ডারি দর্শনের অন্যতম মুখপত্র মাসিক আলোক ধারা ও মাসিক খতিয়ান সম্পাদনা করতেন তিনি। ছিলেন শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত। তিন দশকের বেশি দৈনিক আজাদীতে সম্পৃক্ত ছিলেন। সাংবাদিক সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠায়ও তাঁর অসামান্য ভূমিকা রয়েছে। তিনি চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মাহবুব উল আলম শুধু সাংবাদিকতাই নয়, বহু পাঠকপ্রিয় গ্রন্থের রচয়িতা। জনমুখী সাংবাদিকতায় এক অনন্য অবদান রয়েছে তাঁর।