আছেন জেলে, নিজেকে অসুস্থ দাবি করে ছুটির আবেদন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৬ জুন, ২০২৫ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। কিন্তু সেই তথ্য গোপন রেখে নিজেকে অসুস্থ দাবি করে এক মাসের ছুটির আবেদন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) এক কর আদায়কারী। কিন্তু ‘বিনা বেতনে’ ছুটি চাওয়ায় সন্দেহ সৃষ্টি হয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার। এরপর বিষয়টি তদন্ত করলে ধরা পড়ে গ্রেপ্তারের বিষয়টি। এমনকি অসুস্থতার প্রমাণ হিসেবে চিকিৎসকের যে প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয় সেটিও জাল বলে সাব্যস্ত হয় তদন্তে।

তথ্য গোপন করে ছুটির আবেদনকারী ওই কর আদায়কারী হচ্ছেন রবিউল আলম। গত ২৯ এপ্রিল থেকে ২৮ মে পর্যন্ত বিনা বেতনে এক মাসের ছুটির আবেদন করেন তিনি। ওই ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও গতকাল পর্যন্ত কর্মস্থলে যোগ দেননি তিনি। এ বিষয়ে চসিকের সচিব আশরাফুল আমিন আজাদীকে বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সে জেলে আছে, তারপরও তথ্য গোপন করে ছুটির দরখাস্ত দেয়। কিন্তু জেলে থাকলে ছুটির দরখাস্ত দিতে পারে না। তিনি বলেন, সাধারণত নৈমিত্তিক ছুটি ছাড়া অন্য কোনো ছুটি সচিবালয় থেকে নিতে হয়। কিন্তু এখানে রাজস্ব শাখা থেকে নিয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান ও চসিকের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোয়েব উদ্দিন খানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অন্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রবিউল আলম যে মামলায় গ্রেপ্তার হন সেটা গত বছরের ২২ আগস্ট দায়ের হওয়া। মামলা নম্বর ৭। এ মামলায় গত ২৮ এপ্রিল ভোর রাতে বন্দর থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন রবিউল। পর দিন আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম কারাগারে আছেন।

এদিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গোপন রেখে ৪ মে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে ছুটির আবেদন পাঠান রবিউল। এতে তিনি দাবি করেন, গত ২৮ এপ্রিল অফিস শেষ করে বাসায় ফিরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসক তাকে শারীরিক দুর্বলতার কারণে পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দেন। মানবিক দিক বিবেচনায় তাকে যেন ২৯ এপ্রিল থেকে ২৮ মে পর্যন্ত বিনা বেতনে এক মাসের ছুটি দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা সুপারিশ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনটি পাঠায়। প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা স্বাক্ষর করে গত ২৪ মে আবেদনটি চসিকের সচিবালয় শাখায় পাঠালে সেখানে ধরা পড়ে বিনা বেতনে ছুটি চাওয়ায় মূল কারণ।

তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজাদীকে বলেন, রবিউল যে ডাক্তারের সার্টিফিকেট দেয় সে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি (ডাক্তার) কোনো সার্টিফিকেট দেননি বলে নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে গতকালও রবিউল কর্মস্থলে যোগ দেয়নি রাজস্ব সার্কেল৪ সূত্রে জানা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রকোপ বাড়ছে ডেঙ্গু-করোনার
পরবর্তী নিবন্ধকরোনার নতুন ধরনে আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন সতর্কতার