তফসিলের পরপর নির্বাচনী আচরণবিধি মানাতে চট্টগ্রামে প্রশাসন ও ইসির কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে বেশ কিছু সংস্কার এনে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া আরপিওতে পরিবর্তন আনা হয়। আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং দলের জন্য দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার পর সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের ১৬ নির্বাচনী এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থী এবং তাদের কর্মী–সমর্থকদের আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণে (মোবাইল কোর্টের দায়িত্ব পালনের জন্য) ইসির নির্দেশে জেলা প্রশাসনের ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছেন। আসনভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রার্থী ও তাদের কর্মী–সমর্থকদের আচরণবিধির ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রেখেছেন বলে জানা গেছে। গতকাল চট্টগ্রাম–১৫ (সাতকানিয়া–লোহাগাড়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী নাজমুল মোস্তফা আমিনকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
এই আসনের আচরণবিধি প্রতিপালনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মং এছেন আজাদীকে জানান, নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী প্রার্থীদের জন্য কোনো ধরনের শোভাযাত্রা, বড় গাড়িবহর বা জনদৃষ্টি আকর্ষণকারী প্রদর্শনী নিষিদ্ধ। আচরণবিধি প্রতিপালনে কাউকে কোনো ধরনের ছাড় নয়। আজ বিকালে (গতকাল) লোহাগাড়ার বটতলী স্টেশন মোড়ে বিএনপির প্রার্থী মোটরসাইকেল ও অন্যান্য গাড়িবহর নিয়ে শোডাউনে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় তাকে মোবাইল কোর্টের আওতায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনী এলাকাসমূহে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণে মোবাইল কোর্টের দায়িত্ব পালনের জন্য চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনে ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রত্যেক প্রার্থী, তাদের কর্মী–সমর্থক এবং দলসমূহকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী। তিনি আজাদীকে বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পূর্বশর্ত হচ্ছে নির্বাচনী আইন বা আচরণবিধি মেনে চলা। আমরা আমাদের দিক থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। এখন প্রার্থীদেরকে এলাকায় সহাবস্থান ও নির্বাচনী আইন মেনে ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এবার নির্বাচনী আচরণবিধিতে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং দলের জন্য দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তদন্ত সাপেক্ষে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও রয়েছে ইসির।












