প্রথমে পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে মাটি ঢালু করে কেটে তাতে বৃষ্টির পানি আটকানোর ব্যবস্থা করা হয়। এরপর বৃষ্টি হলে তা ধসে পড়লে মাটি সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবে ইতিমধ্যেই ১০–২০ ফুট পাহাড় কেটে সমতল ভূমিতে রূপ দেয়া হয়েছে। এর পাশেই সড়কের দিকে পাহাড়ের খোলস আকৃতি থাকলেও পেছনে কেটে একেবারে সমতল ভূমিতে রূপ দিয়ে প্লট হিসেবে চলছে বিক্রি। এভাবে নানা অভিনব কৌশলে পাহাড় নিধনের মহাযজ্ঞ চলছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসনের মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যেই। উপজেলা সদরের ইছাখালী জাকিরাবাদ নামক এলাকায় অন্তত পাঁচ–ছয়টি স্পটে এভাবে সড়কের পাশেই পাহাড় কাটার ধুম লেগেছে। এভাবে এই এলাকাতেই অনেক পাহাড় ইতিমধ্যেই বিলিন হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। বছরের পর বছর প্রশাসনের নাকের ডগায় এভাবে পাহাড় নিধন হলেও বিষয়টি তাদের নজরে আসেনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ইছাখালী–জাকিরাবাদ পিচঢালা সড়কের এক কিলোমিটার দূরত্বে গেলেই দেখা মিলবে এমন অভিনব কৌশলে পাহাড় কাটার চিত্র। জাকিরাবাদ সড়কের বাকে প্রথম দেখাতে পাহাড় মনে হলেও পেছনে যেতেই দেখা যাবে এটি কেটে একেবারে সমতল ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। এর কিছুদূরে সড়কে ঘেরা দিয়ে শতবর্ষী একটি বাদাম গাছ পাহাড়সহ কেটে ফেলা হয়েছে। পেছনের সমতল করে ফেলা ভূমি প্লট হিসেবে বিক্রি চলছে বলে জানান স্থানীয়রা। পাশের অপর একটি পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে নেয়া হয়েছে অভিনব কৌশল। যাতে বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে মাটি নেমে যায়, অত্যন্ত সুকৌশলে সেই ব্যবস্থাই করা হয়েছে। এছাড়া এই পাহাড়টিকে কয়েকদিক থেকে কেটে কেটে গর্তের ন্যায় করে ফেলা হয়েছে। এভাবে এই সড়কপথে আগালে অন্তত আরও কয়েকটি স্পটে নানা কৌশলে সড়কে ঘেরা দিয়ে পাহাড় কাটার দৃশ্য দেখা গেছে। এসবের সাথে জড়িত তাৎক্ষণিক কারো নাম প্রকাশ না করলেও প্রভাবশালী মহল এসবের সাথে জড়িত বলে স্থানীয়রা ইঙ্গিত করেন।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সুকৌশলে সময় নিয়ে সড়কের পাশের পাহাড়গুলো কাটা হচ্ছে। পিচঢালা সড়কের সৌন্দর্য ছিলো সুউচ্চ পাহাড়গুলো। কিন্তু এসব নিধন হওয়ায় যেমন কমছে সৌন্দর্য, তেমনি নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। অথচ পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশ কেউ বিষয়টি লক্ষ করেনি। এমনকি এসব বন্ধে কোনদিন অভিযানও চালাতে দেখেনি স্থানীয়রা। এভাবে চলতে থাকলে পাহাড় অধ্যুষিত জাকিরাবাদ এলাকাটি একসময় পাহাড়শূন্য হয়ে পড়বে বলে আশংকা স্থানীয়দের। এতে পরিবেশ বিপর্যয়েরও আশংকা করছেন তারা।
এই ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারজান হোসাইন বলেন, ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে জড়িতদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।