শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আগের দামে ফিরে গেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলগুলোর ডাইনিংয়ের খাবার। হঠাৎ হলে খাবারের দাম বাড়ানোয় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে জরুরি বৈঠক করে কমানো হয়েছে খাবারের দাম।
এদিকে দাম আগেরটা করা হলেও মান নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে বরাবরের মতোই। দাম কমানোয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন স্বস্তি দেখা গেছে তেমনি খাবারের মান কমে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এমনিতেই হলের খাবার মানেই স্বাদ–গন্ধহীন ডাল–ভাত। অন্য সময় যেমন–তেমন খাওয়া গেলেও রমজানে একটু ভালো খেতে হয়। নইলে অনেক কষ্ট হয়ে যায়।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ দেখিয়ে রমজানের প্রথমদিন থেকে খাবারের দাম নির্ধারণ করা হয় ৩৫ টাকা। পাশাপাশি সেহরির দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে চবির বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর রাতেই জরুরি সভায় দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত অথবা নিম্নবিত্ত পরিবারের। অনেক শিক্ষার্থী পরিবার থেকে সাপোর্ট পেলেও অনেকের পরিবার উল্টো সন্তানের দিকেই তাকিয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এখানে শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো কর্মসংস্থান নেই। যার ফলে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে পরিবারের ওপর নির্ভর করেই পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হয়। তাদের নির্ভর করতে হয় হলের খাবারের ওপর।
জানা যায়, হলগুলোতে খাবারের সঙ্গে বিশুদ্ধ পানির জন্য নেই পর্যাপ্ত ফিল্টারিং ব্যবস্থা। প্রতিটি হলে ৩০০ থেকে ৫০০ এর বেশি শিক্ষার্থী থাকে। অথচ সেখানে মাত্র একটা ফিল্টার। তাই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর ভরসা ট্যাংকের পানি। বিষয়গুলো পরিবর্তনের দাবিতে কয়েক দফায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনও করেছে। কিন্তু ফলাফল শূন্য।
প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে খাবার আগের দামেই রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খাবারের দাম রোজার পরে বাড়ানো হবে। আপাতত রমজানের কথা বিবেচনা করে পূর্বের দামে খাবার খেতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
আলাওল হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. ফরিদুল আলম আজাদীকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডাইনিং ম্যানেজাররা আরও আগে থেকেই খাবারের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। আমরা বাড়াতে দিইনি। সবদিক বিবেচনা করে রোজার আগে ১০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। তবে খাবারের মান ঠিক রাখতে বলা হয়েছে।