আগুনে পুড়ল ২৫ দোকান

জহুর হকার মার্কেট

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১২ মার্চ, ২০২২ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর জহুর হকার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভবনের নিচ ও দ্বিতীয় তলায় থাকা ৯০০ দোকানের মধ্যে ২৫টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। এতে করে আশপাশের জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ছুটির দিনেও দোকানের মালিক-কর্মচারীদের ছুটে আসতে হয় ঘটনাস্থলে। এর মধ্যে খবর চলে যায় ফায়ার সার্ভিসে। একপর্যায়ে তাদের চারটি ইউনিটের ১২টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আগুন নিয়ন্ত্রণে দেড় ঘন্টার কিছু বেশি সময় লেগে যায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। জহুর হকার মার্কেটের প্রবেশ পথ খুবই সরু। এছাড়া অত্র এলাকায় পানির উৎস নেই বল্লেই চলে। এতে করে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। কোনো উপায় না পেয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লালদীঘি থেকে পানির ব্যবস্থা করা হয়। এতে করে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. আনিছুর রহমান আজাদীকে বলেন, আমরা খবর পেয়েই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। দ্রুত ঘটনাস্থলে এসেছি। আগ্রাবাদ, নন্দনকানন, চন্দনপুরাসহ একাদিক স্টেশনের চারটি ইউনিটের ১২টি গাড়ি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। এখন পর্যন্ত (রাত ১১ টা ২০) কোনো হতাহতের খবর নেই। তবে ভবনের নিচ ও দ্বিতীয় তলার ৯০০ দোকানের মধ্যে ২৫ টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কেমন ও আগুনের সূত্রপাত নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয় এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত করে জানানো যাবে।
মো. আনিছুর রহমান আরো বলেন, হকার মার্কেটে পানির উৎস নেই। আগুন নিয়ন্ত্রণে তাই একটু বেশি সময় লেগে গেছে। তবে লালদীঘির পানিতে রক্ষা পাওয়া গেছে। ওই পানিতেই আগুন নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। এদিকে আগুন লাগার খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন দোকানের মালিক-কর্মচারীরা। তাদের মধ্যে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আহসান নামের এক দোকানদার ব্যবসায়ী বলেন, দোকানে সাড়ে ৬ লাখ টাকার মালামাল ছিল। সব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। এখন কী হবে তার! উসমান নামের আরেক দোকানদার বলেন, প্রায় দেড় কোটি টাকার মালামাল ছিল তার দোকানে। এখন সব পুড়ে ছাই হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয় নেতৃবৃন্দও ঘটনাস্থলে হাজির হন। এদের মধ্যে কাউন্সিলর জওহরলাল হাজারী আজাদীকে বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের কৃতিত্ব দিতে হয়। তারা খুব দক্ষতার সাথে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমানের মতো তিনিও পানির উৎস না থাকার বিষয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। কোটি কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীরও দোকান রযেছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে জানানো হয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসা কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, আগুন লাঘার সাথে সাথেই খবর পেয়েছি। পরে ফায়ার সার্ভিসকে তা জানায়। তারা তাদের মতো আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা জানমালের নিরাপত্তায় কাজ করেছি। যাতে করে কোনো ধরনের লুটপাটের ঘটনা না ঘটে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এমন কিছু ঘটেনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাগরে গোসল করতে নেমে কলেজছাত্রের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধতেলের দাম নিয়ে ধৈর্য ধরার আহ্বান আইনমন্ত্রীর