আগাম আনারসে জাগছে আশা

রাঙামাটি প্রতিনিধি | সোমবার , ১৫ মার্চ, ২০২১ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

রাঙামাটিতে ১১শ হেক্টর জমিতে আগাম আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও পাচ্ছেন ভালো। ফলে আশা জাগছে কৃষকের মনে। হাসি ফুটেছে মুখে। আনারসের রাজধানী হিসেবে খ্যাত নানিয়ারচরে এবারও আনারসের ফলন ভালো হয়েছে। রাঙামাটি শহরের বনরুপা সমতাঘাট বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, আগাম আনারসে ভরপুর হয়ে উঠেছে রাঙামাটি সমতাঘাটের বাজার। রসালো আনারসের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারদিকের পরিবেশ। তবে আনারসের আগাম ফলন ভালো হওয়ায় এবং ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি চাষিরা। বর্তমানে রাঙামাটি শহরের বাজারগুলোতে জমজমাট বিক্রি হচ্ছে আনারস। এছাড়াও নানিয়ারচর, বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নসহ পুরো জেলার আনারস সরবরাহ হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এদিকে, স্থানীয়রা আগাম আনারস খেতে পেয়ে অত্যন্ত খুশি। স্থানীয় হাট বাজার থেকে এনে অনেকে ফেরি করে শহরের বিভিন্ন আনাচে কানাচে আনারস বিক্রি করছে।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন স্থানে আনারসের প্রচুর উৎপাদন হচ্ছে। সবচেয়ে অধিক উৎপাদন হয়েছে নানিয়ারচর উপজেলায়। বাজারে বড় সাইজের প্রতি জোড়া আনারস খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। আর ছোট সাইজের আনারস বিক্রয় হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। তবে কৃষকদের কাছে পাইকাররা কিনছেন মাত্র ২০-৩০ টাকায়। নানিয়ারচরসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ আনারস জেলা সদরসহ বিভিন্ন বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে রাঙামাটির আনারস যাচ্ছে ঢাকা, শরীতপুর ও চট্টগ্রাম, মীরসরাইসহ বাইরের জেলাতেও।
চাষিরা মনে করছেন, করোনার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গতবারের আগাম আনারস চাষিরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এবার ভালো ফলন হওয়ায় তা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
নানিয়ারচর উপজেলার হাজাছড়া এলাকার বাসিন্দা আনারস বাগান চাষি শান্তি বিকাশ চাকমা জানান, আমি ৩০ হাজার আনারস চারা রোপণ করেছি। গতবারের তুলনায় এবার ভালো ফলন হয়েছে এবং ভালো দামে বিক্রিও হচ্ছে। আনারস চাষ করতে যা খরচ হয়েছে তার দ্বিগুণ লাভ করতে পারবো।
রাঙামাটি কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ন প্রসাদ মল্লিক বলেন, এ মৌসুমে জেলায় আনারসের চাষ হয়েছে ২১৩০ হেক্টর জমিতে। এবার আগাম ১১০০ হেক্টর জমিতে আগাম আনারসের চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, হেক্টর প্রতি উৎপাদন ধরা হয়েছে ২০ মেট্রিক টন, এতে করে প্রায় ২২ হাজার মেট্রিক টন আনারস উৎপাদন হয়েছে। আগাম আনারস চাষে ফলন বৃদ্ধির জন্য এক ধরনের ভিটামিন ব্যবহার করা হয়। তবে এই ভিটামিন মানবদেহে তেমন ক্ষতিকারক নয়। এ ব্যাপারে কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর চাষিদের সুপরামর্শ দিয়ে থাকেন। জেলার প্রত্যেক উপজেলাতে আমাদের উপ-সহকারীরা কৃষকদের সহায়তায় সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক ঝড়ে দিকহারা ৫ নাবিক
পরবর্তী নিবন্ধকাদের মির্জার বিরুদ্ধে এবার আদালতে অভিযোগ