আগামী বর্ষার আগেই চালু হবে সব স্লুইচ গেট

নগরীর খালগুলোতে দুটি প্রকল্প।। ৫টি চালু, ১২ টির মধ্যে ১০ টির কাজ প্রায় শেষ, বাকি দুটির কাজও শুরু হয়েছে

হাসান আকবর | সোমবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ at ৪:৩০ পূর্বাহ্ণ

আগামী বর্ষার আগেই নগরীর খালগুলোতে নির্মাণাধীন সবগুলো স্লুইচ গেট পুরোদমে চালু হবে। ইতোমধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় মহেশ খালসহ পাঁচটি খালে পাম্প হাউজসহ স্লুইচ গেট চালু হয়েছে। সিডিএর অপর একটি প্রকল্পের আওতাধীন ১২টি স্লুইচ গেটের মরিচা প্রতিরোধক গেট নির্মিত হচ্ছে নেদারল্যান্ডে। ওগুলো আসার পর স্থাপন করা হবে চাক্তাই খালসহ অন্য খালগুলোতে। বর্ষার আগে সবগুলো স্লুইচ গেট পাম্প হাউজসহ পুরোদমে চালু হলে নগরীর জলাবদ্ধতার বহুলাংশে অবসান হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ইতোমধ্যে মহেশ খালের সুফল মিলছে। অস্থায়ীভাবে স্থাপিত চাক্তাই খালের গেটের কারণে এবার চাক্তাইখাতুনগঞ্জ আগের মতো ডোবেনি। জানা যায়, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দুটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মধ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী। প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ওই প্রকল্পের আওতায় নগরীর মহেশ খাল, ফিরিঙ্গিবাজার খাল, টেকপাড়া খাল, কলাবাগিচা ও মরিয়ম বিবি খালে স্লুইচ গেট নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যে উক্ত পাঁচটি স্লুইচ গেট পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। স্থাপন করা হয়েছে গেট, বোট পাস ও পাম্প হাউজ।

মহেশখালের স্লুইচ গেটের সুফল মিলতে শুরু করেছে। নগরীর আগ্রাবাদ ও হালিশহরসহ বিস্তৃত এলাকা আগের মতো আর সকালসন্ধ্যা ডুবছে না বলে দাবি করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, জোয়ারের সময় গেট বন্ধ করে দেওয়ার ফলে এখন আর আগের মতো এলাকা ডুবছে না। কিছুদিন আগে চালু হওয়া পাম্পের সহায়তায় এখন বৃষ্টির সময় পানি পাম্প করে নদীতে ফেলা হবে। এতে করে বৃষ্টির সময় সুফল মিলবে।

সেনাবাহিনীর বাস্তবায়ন করা প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী আজাদীকে বলেন, আমাদের প্রকল্পের আওতায় ৫টি স্লুইচ গেট রয়েছে। এগুলো পুরোদমে চালু আছে। এগুলো চালু হওয়ায় সুফল মিলছে। আগ্রাবাদসহ সন্নিহিত অঞ্চলে এখন আর আগের মতো পানি উঠছে না। আগামী বর্ষায় এসব স্লুইচ গেটের সুফল আরো বেশি পাওয়া যাবে।

এই প্রকল্প ছাড়াও সিডিএ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ করছে। এই প্রকল্পে স্লুইচ গেট রয়েছে ১২টি। ১২টি গেটের মধ্যে ১০টি নির্মাণ করা হচ্ছে। বাকি দুটির মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। চাক্তাই খাল, বারইপাড়া খাল, রাজাখালী খালসহ ছোটবড় মিলে উপরোক্ত ১০টি স্লুইচ গেটের মধ্যে চারটিতে বোট পাস রয়েছে। এসব স্লুইচ গেটের আরসিসি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কোনো কোনোটিতে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী গেট। স্থায়ী গেট ও পাম্পসহ আগামী জানুয়ারিফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই ১০টি স্লুইচ গেট চালু হয়ে যাবে। এসব স্লুইচ গেটে মরিচা প্রতিরোধক বিশেষায়িত গেট স্থাপন করা হচ্ছে। অন্তত একশ বছরেও যাতে কিছু না হয় সেজন্য কাস্ট আয়রনের পরিবর্তে ফাইভার রেইনপোস্ট পলিমার (এফআরপি) গেট তৈরি করে আনা হচ্ছে নেদারল্যান্ড থেকে।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এসব গেট আসবে জানিয়ে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ইংল্যান্ড থেকে পাম্প কেনা হয়েছে। ওগুলো প্রায় একই সময়ে এসে পৌঁছাবে। গেট ও পাম্প আসার পর স্লুইচ গেটগুলো পুরোদমে চালু করা হবে। তখন নগরীর বিস্তৃত এলাকা জলাবদ্ধতা থেকে অনেকটা মুক্তি পাবে। তিনি বলেন, আমরা আগামী বর্ষার আগেই স্লুইচ গেটগুলো চালু করতে চাই। এজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপি শর্ত তুলে নিলে সংলাপ : কাদের
পরবর্তী নিবন্ধরামুতে পুকুরে ডুবে কিশোরের মৃত্যু