আগামীর আহ্বান

নাজনীন আমান | সোমবার , ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ

বইছে মাঘের হিমেল হাওয়া। ঝরা পাতা, সোনালী রোদ্দুর, কুয়াশার চাদরে আবৃত ভোর প্রকৃতিতে চলছে আনন্দময়ী খেলা। তারই মধ্যে চলছে জীবনে চলার জয়গান। বছর ঘুরে শুরু হয়েছে নতুন বছর, সাথে নতুন ক্লাস, নতুন বই। চারদিকে নতুনের আমেজ। বিভিন্ন স্কুল, কলেজে শুরু হয়েছে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। তারই ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজ চট্টগ্রামের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। আরও একবার এত সুন্দর আয়োজনের সাক্ষী হয়ে গেলাম স্কুলের আঙিনায়।

গত ১৯ শে জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কর্নেল রুসলান উর রহমান পি এস সি, স্টাফ হেড কোর্য়াটার সদর দপ্তর, ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান। ঘড়িতে বেজে ৩.৩০। বিউগলের সুর বেজে উঠে, জানিয়ে দেয় প্রধান অতিথির আগমনী বার্তা। তাঁকে ফুল ও ব্যাজ পরিয়ে সাদরে বরণ করে নেন কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়, স্কুলের ছোট ছোট শিশুরা। বিএনসিসির চারজন পাইলট গার্ড অব অনার দিয়ে মূল মঞ্চের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় প্রধান অতিথিকে। বেলুন ও মশাল জ্বালিয়ে উদ্বোধন করা হয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার। আকাশ ছেয়ে যায় রঙিন বেলুনে। এরপর কুচকাওয়াজের জন্য অনুমতি নিয়ে বাদ্যের তালে তালে কুচকাওয়াজ শুরু করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। আর পুরো কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব দেয় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র, সিইএসসির প্রিফেক্ট মোহাম্মদ ইন্তিকাব মাহমুদ। কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে বেগম রোকেয়া হাউস, ডক্টর মোঃ শহিদুল্লাহ হাউস,ডক্টর কুদরত ই খুদা হাউজ, বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হাউজ, সিইএসসি কন্টিনজেন্ট, গার্লস গাইডস, বিএনসিসি, ও সিইএসসি এর নিজস্ব বাদক দল। এরপর পরিবেশন করা হয় কারাতে, তায়কানডো, ও মুগ্ধকর ডিসপ্লে। আবহমান বাংলার চিরায়ত লোক সংস্কৃতি ও প্রকৃতির রূপ পরিবর্তন ছিল এবারের ডিসপ্লের বিষয়বস্তু। যা সত্যিই দৃষ্টিনন্দন ও উপভোগ্য ছিল। খেলাধূলার বেশ কিছু ইভেন্ট আগেই হয়ে গিয়েছিল। মূল অনুষ্ঠানের দিন আয়োজন করা হয় ১০০মিটার দৌড়(মেয়েদের),যোগাযোগ দৌড় (ছেলেদের), অভিভাবক পর্ব ও যেমন খুশি তেমন সাজ। উভয় খেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে ড. মুহাম্মদ কুদরতই খুদা হাফেজ। টানটান উত্তেজনায় ভরপুর ছিল অভিভাবক পর্ব, পুরুষদের জন্য বেলুন ফাটানো ও বালিশ খেলা। এরপর অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল রুমানা জামান পি.এস.সি শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এই বছর অ্যাথলেটে চ্যাম্পিয়ন হয় বেগম রোকেয়া হাউস। রানার্স আপ হয় ডক্টর মোহাম্মদ খুদরতখুদা হাউস। শিক্ষা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক এই তিনটি বিভাগে সমানভাবে পারদর্শিতার জন্য চ্যাম্পিয়ন হয় ড. মোহাম্মদ কুদরতই খুদা ও রানার্সআপ হয় বেগম রোকেয়া হাউস। সবশেষে প্রধান অতিথি সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর বক্তব্য রাখেন। পাহাড়ের কোলে ঢলে পড়ে সূর্য। সাথে সাথে এত দিনের আয়োজনে পেল পরিপূর্ণতা। অসংখ্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন স্কুল কলেজের অধ্যক্ষ, সকল শিক্ষকবৃন্দ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। বিজয় দলদের জানাই আন্তরিক ও শুভেচ্ছা। সবশেষে যাদের কথা না বললেই নয় তারা হল অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীবৃন্দ। যারা অনেক পরিশ্রম ও উদ্দীপনায় এত সুন্দর একটি আয়োজনকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে। যাদের অক্লান্ত শ্রম ও চেষ্টার জন্যই আমরা দর্শকরা এত সুন্দর অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পেরেছি। অন্তরের অন্তস্থল থেকে তোমাদের জন্য রইল অসংখ্য অভিনন্দন ও দোয়া। তোমাদের আগামীর পথচলা উজ্জ্বল হোক এই আহবানই রইল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমায়ার শৈশব
পরবর্তী নিবন্ধ‘যাদের করেছ অপমান, অপমানে হয়েছ তাদের সমান’