আক্ষেপ নিয়েই ক্যারিয়ার শেষ ব্রাজিল তারকা মার্তার

স্পোর্টস ডেস্ক | সোমবার , ১২ আগস্ট, ২০২৪ at ৭:১৫ পূর্বাহ্ণ

নারী ফুটবলে বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা ব্রাজিলের মার্তা। এই কিংবদন্তী ফুটবলার চেয়েছিলেন এবারের অলিম্পিকের ফুটবলের সোনা জিতে ক্যারিয়ার শেষ করতে। কিন্তু সেটা আর হলোনা। প্যারিসে শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ১০ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে স্বর্ণ জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। নারী ফুটবলে সবচেয়ে বেশি সোনা জয়ের রেকর্ড তাদেরই ছিল। এবারের জয়ে পাঁচ সোনায় রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ হলো তাদের। ব্রাজিলের এই সোনা রইল অধরাই। এবার নিয়ে তিনবার তারা পেল রূপা। প্রতিবারই ফাইনালে তারা হারে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। ২০০৪, ২০০৮ সালের পর এবার। তিনবারই ব্রাজিল দলে ছিলেন মার্তা। ব্রাজিলের সর্বকালের সেরা নারী ফুটবলার, ব্রাজিলের সফলতম স্কোরার বিশ্ব ফুটবলের সর্বকালের সেরাদের একজন এই মহাতারকার ক্যারিয়ার শেষ হচ্ছে বড় কোনো দলীয় সাফল্য ছাড়াই। খেলা শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলাররা যখন মেতে উঠলেন উদযাপনে তখন হতাশ ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের অনেকেই এগিয়ে গেলেন মার্তার দিকে। হয়তো কিংবদন্তিকে সান্তনা দিতে চাইছিলেন তারা। কিন্তু মার্তাকে বেশ শক্তই দেখা গেল। ভেঙে পড়লেন না এই ফরোয়ার্ড। উল্টো তিনিই সতীর্থদের কাছে গিয়ে পিঠ চাপড়ে আলিঙ্গনে জড়িয়ে সান্তনা দিলেন। তবে নিজের ভেতরটা নিশ্চয়ই ফাঁকা অনুভব করছিলেন তিনি। রেকর্ড টানা পাঁচবারসহ মোট ছয়বার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার হওয়ার রেকর্ড তার। ছেলেমেয়ে মিলিয়েই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন তিনি। বিশ্বকাপে জিতেছেন গোল্ডেন বল ও গোল্ডেন বুট। ছেলেমেয়ে মিলিয়ে পাঁচটি বিশ্বকাপে গোল করা প্রথম ফুটবলার তিনি। পাঁচটি অলিম্পিকে গোল করার অনন্য কীর্তিও তার। অবিশ্বাস্যভাবে এবার ষষ্ঠ অলিম্পিক খেললেন এই ৩৮ বছর বয়সে। শেষ বেলায় এসে অপূর্ণতা ঘোচানোর আরেকটি সম্ভাবনা জেগেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হলো না। এখনও আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানাননি তিনি। তবে জানিয়ে দিয়েছেন, এই বছরই শেষ। তাই বড় কোনো আসরও তাই শেষ এই অলিম্পিক দিয়েই। ব্যক্তিগত সাফল্য আর রেকর্ডে টইটম্বুর তার ক্যারিয়ার। কিন্তু দলীয় অর্জনে প্রাপ্তি একবার বিশ্বকাপে রানার্স আপ আর অলিম্পিকে তিনটি রূপা। ম্যাচ শেষে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় অবশ্য একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মার্তা। তাকে জড়িয়ে তখন সান্তনা দেন কোচ। ফাইনালের দর্শকদের মধ্যে ছিলেন আর্সেনালের সাবেক কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার, হলিউড তারকা টম ক্রুজসহ আরও অনেক তারকা। ম্যাচ শেষে কনসার্টে গ্যালারির দর্শকদের সঙ্গে নাচেগানে মেতে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েরাও। তবে ম্যাচের সবচেয়ে বড় অভিবাদন বরাদ্দ ছিল মার্তার জন্যই। রূপার পদকের জন্য যখন একে একে সবার নাম ঘোষণা করা হচ্ছিল, মার্তার নাম উচ্চারিত হতেই দর্শকদের উল্লাসে গোটা স্টেডিয়াম যেন কেঁপে ওঠে। আরও একবার প্রমাণ হয়ে যায় দল সাফল্য না পেলেও তার জনপ্রিয়তা, তার আবেদন আর তার ওজন কতটা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅলিম্পিক রেকর্ডে ম্যারাথন জিতলেন সিফান হাসান
পরবর্তী নিবন্ধআইসিসির নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবর্তন হবে বিসিবিতে