আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী আন্দোলনমুখী বিএনপি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নির্বাচন কমিশনের

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দল গুছিয়ে নির্বাচনমুখী হয়েছে। তবে হঠাৎ আন্দোলনমুখী হয়েছে বিএনপি। সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নেতাকর্মীদের চাঙা করতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে দলটি। এরই অংশ হিসেবে বিভাগীয় শহরগুলোতে মহাসমাবেশ করছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৮ জুলাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) রোডম্যাপ অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ছাড়াও ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোও প্রস্তুতি নিয়েছে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, ন্যাপ, সাম্যবাদী দল ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনসহ অন্য দলগুলোও নির্বাচনমুখী। এদিকে নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় নেতারা সারা দেশে দল গুছানোর কাজে নেমে পড়েছেন। পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজও করছেন। একই সময়ে বিএনপিসহ ২২ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামী (নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল) স্বতন্ত্রভাবে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। আগামী নির্বাচনের জন্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্র্থীদের নামও ঘোষণা করেছে তারা। জামায়াত-শিবির থেকে বেরিয়ে গঠন করা জন আকাক্সক্ষার বাংলাদেশ সংগঠনটি ‘আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টি’ নামে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। নবগঠিত দলটির আহ্বায়ক সাবেক সচিব সোলায়মান চৌধুরীর নেতৃত্বে ইসির সকল শর্ত পূরণ করে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে। এই দলটিও আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

এদিকে ভোটের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ মুক্তির বিষয়টি সামনে আনা হচ্ছে। কৌশল বদল করেছে দলটি। ভোটের আগে তৈরি করা হচ্ছে দরকষাকষির নানা ইস্যু। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছেন। ছাত্রদল-যুবদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য অঙ্গসংগঠনগুলোও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা হচ্ছে। দল ও অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে বিভাগীয় পর্যায়ে শুরু হয়েছে মহাসমাবেশ। আন্ত্তর্জাতিক পর্যায়েও যোগাযোগ ও তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকলেও নির্বাচন কমিশন তাদের রুটিন মাফিক সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন অফিসেও শুরু হয়েছে নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি। আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝেও নির্বাচন ঘিরে অনেকটা চাঙ্গা ভাব বিরাজ করছে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান আজাদীকে বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে দল গুছিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি রাজপথে বিএনপির যে কোনো নাশকতামূলক আন্দোলন মোকাবেলার জন্য আমাদের নেতাকর্মীরা অতীতের মতো প্রস্তুত আছে। বিএনপির নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন-সমাবেশে প্রশাসন সহযোগিতা করছে। চট্টগ্রামে তারা নির্বিঘ্নে মহাসমাবেশ করেছে। কিন্তু ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগের মতো যদি জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন করে মানুষের জানমালের ক্ষতি করতে চায়, তাহলে আমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বসে থাকব না। তাদেরকে প্রতিহত করব।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিত বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সবসময় নির্বাচনমুখী। তারা নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন চায়। আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় জনগণের ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং সেই অধিকার নিশ্চিত করেছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনও সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির জন্য এদেশের জনগণ বসে থাকবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীমান্তের গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ স্থানে ২ শতাধিক মানুষ
পরবর্তী নিবন্ধজেলেপল্লীতে ফের মাছ ধরার প্রস্তুতি