আওয়ামী লীগ ইতিহাস বিকৃত করছে : খসরু

উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২ জুন, ২০২১ at ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগ ইতিহাস বিকৃত করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, একটি পক্ষ বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ফলাও করে প্রচার করে জিয়াউর রহমান আর্মি থেকে ক্ষমতা দখল করেছেন। কিন্তু তারা এর মাধ্যমে ইতিহাস বিকৃত করে আসছে। জিয়াউর রহমান মার্শাল ল’র মাধ্যমে বা কোনো ক্যু’র মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেননি। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর যখন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় তখন সারাদেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়। যেমনটি ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে থাকাকালে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করেছেন। ঠিক একই প্রেক্ষাপটে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর তিনি ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন, তখন এ দায়িত্ব নেয়ার কেউ ছিল না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তিনি সে সময় সেনাবাহিনীতে ছিলেন না, সে সময় সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন আরেকজন। তখন আর্মির প্রধান যিনি, তিনি আওয়ামী লীগ নেতারা যে মন্ত্রিসভা গঠন করেন তাতে তার যোগসাজশ ছিল, কিন্তু ব্যর্থ হওয়ার কারণে সেটা আর ঠিকেনি। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেনি।
তিনি গতকাল বিকালে নগরীর নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি অসামপ্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। দেশের সীমানার মধ্যে ৪৭ টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী বসবাস করে। তাদের নিজস্ব ভাষা ও বর্ণমালা আছে। দেশের সীমানার মধ্যে যারা বসবাস করে তারা সবাই বাংলাদেশি। সেই জন্য সবাইকে সমান সুযোগ করে দিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রচলন করেছিলেন। দেশে আজকে মানুষের ভোটাধিকার ও কথা বলার অধিকার নেই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। আজকে একটা অনির্বাচিত অবৈধ সরকার দেশ শাসন করছে। আজকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার অবস্থা নেই। যারা অনির্বাচিত তারা দুর্নীতিবাজ হয়, তারা জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
প্রধান বক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান শুধু একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না তিনি ছিলেন রনাঙ্গনের বীর সেনানায়ক। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন বলেই আমরা স্বাধীন একটি রাষ্ট্র পেয়েছি। জিয়াউর রহমান শুধু একজন প্রেসিডেন্ট ছিলেন না, একজন দার্শনিকও ছিলেন তিনি।
বিশেষ অতিথি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মহাকাব্য। দেশ ও জনতার দুর্যোগকালে তিনি আলোর দিশারী হয়ে এসেছেন। তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার সময়ে গুণীদের কদর করেছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, যে কারণে এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ দিয়ে, রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, তার সঠিক মর্যাদা পাচ্ছেন না এদেশের মানুষ। মহান মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে।
সভাপতির বক্তব্যে উত্তর জেলা বিএনপি’র আহবায়ক ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে মহান মুক্তিযুদ্ধ একটি কালজয়ী ইতিহাস। আর ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানসহ অসংখ্য মহানায়ক। মুক্তিযুদ্ধকে একটি দল নিজেদের ইতিহাস বলে দাবি করে আসছেন। এ ইতিহাসের সাথে এদেশের গণমানুষের যে ইতিহাস জড়িয়ে আছে, তা স্বীকার করছেন না এ দলটি। দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করে মানুষের কথা বলার মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ হারুন। বক্তব্য রাখেন উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এম এ হালিম, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, নুরুল আমিন, নূর মোহাম্মদ, ইঞ্জি. বেলায়েত হোসেন, কর্নেল আজিম উল্লাহ বাহার, অধ্যাপক জসিম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাড. কাশেম চৌধুরী, হুমায়ুন কবির চৌধুরী আনসার, অ্যাড. আবু তাহের, মোবারক হোসেন কাঞ্চন, হেলাল উদ্দীন, কমল কদর, জাহিদুল হক, জামাল হোসেন, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান জসিম, সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী, মহিলাদল নেত্রী আফরোজা বেগম জলি, মেহেরুন্নেছা নারগিস, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শহীদুল আলম, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মনিরুল আলম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩৬ লাখ টাকার ইয়াবাসহ বাস হেলপার আটক
পরবর্তী নিবন্ধহেলমেট ছাড়া বাইকে চড়ে ফেসবুক লাইভ