নগরীর লালখানবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী প্রচারে যাওয়ার আগে দলটির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আজ শনিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।
দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাথর নিক্ষেপে অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে ঐ এলাকায় আর গণসংযোগ করেননি রেজাউল। বিডিনিউজ
এ বিষয়ে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, “মেয়র প্রার্থীর প্রচারণার কথা থাকলেও তিনি সেখানে যাননি। দুই পক্ষের মধ্যে সমস্যা হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন আছে।”
আর মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের সঙ্গে থাকা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. ইলিয়াস বলেন, “ঘটনার সময় আমরা পাহাড়তলি এলাকায় গণসংযোগে ছিলাম। পরে আর লালখান বাজারে যাইনি। এখন বাগমনিরাম ওয়ার্ডে গণসংযোগে আছি।”
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠানটুলিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। ঐ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদের ওরফে মাছ কাদের গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন।
শনিবার বিকেলে লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পূর্বনির্ধারিত গণসংযোগ উপলক্ষে টাইগার পাস বটতল মোড় এলাকায় অনুসারীদের নিয়ে জড়ো হন দল মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল।
পরে সেখানে আসেন লালখান বাজার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম ও তার অনুসারীরা।
এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে ধাওয়া ও ইট নিক্ষেপ শুরু হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল বলেন, “আজ মেয়র প্রার্থী রেজাউল ভাইয়ের প্রচারণা ছিল। আমার হাজার দেড়েক নেতাকর্মী বেলা ৩টায় সেখানে সমবেত হয়। এর মধ্যে নারী কর্মীরাও ছিলেন। এক পর্যায়ে দিদারুল আলম মাসুমের নেতৃত্বে শ’ খানেক লোকের একটি মিছিল সেখানে ঢুকে পড়ে। তারা আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।”
এতে তার চারজন সমর্থক আহত হয়েছেন বলে দাবি বেলালের। তারা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
আর ঘটনার বিষয়ে দিদারুল আলম মাসুম বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলের পেছনে তারা হামলা করেছে, ইট-পাথর মেরেছে। আমার ছয়-সাতজন লোক আহত হয়েছে। আমরা এলাকায় এখন প্রতিবাদ সমাবেশ করছি। রাজনৈতিক কর্মীরা কীভাবে এ ধরনের হামলা করে?”
নগরীর ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল হাসনাত বেলাল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেও এফ কবির মানিক নামে একজন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।
এখানে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিদায়ী মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মাসুম ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যা মামলার আসামি।
গত দুই বছরে এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫০টির বেশি মামলা হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দুই পক্ষের দু’জন ছুরিকাঘাতে আহত হন।