করোনাভাইরাস মহামারীর নতুন যে ধাক্কা আসছে, তা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল রোববার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ নির্দেশনা দেন দলটির সভাপতি। খবর বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস ‘সাময়িকভাবে কিছু বাধা’ সৃষ্টি করলেও তাতে থেমে না গিয়ে সরকার দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ অব্যাহত রেখেছে। সে ক্ষেত্রে আমি আমার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যে যেখানে আছেন, তাদেরকে বলব এবং আওয়ামী লীগ ও প্রতিটি সহযোগী সংগঠন… যখন করোনাভাইরাসের প্রচণ্ড মহামারীর আকার ধারণ করল, সেই সময় যেমন মানুষের পাশে আপনারা দাঁড়িয়েছিলেন, আবারও সেই করোনার একটা ধাক্কা আমরা দেখতে পাচ্ছি আসছে। এখন আমাদের সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে যে করোনাভাইরাসে যেন মানুষের কষ্ট না হয়। একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়ানো এটা আমাদের কর্তব্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঠিক আগের মতনই আপনাদের এখন থেকে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। সেই সাথে কতগুলো নির্দেশনা যা আমরা আগে দিয়েছিলাম আবারও পুনর্ব্যক্ত করব, সেইগুলো আবার পালন করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যেমন করব, কিন্তু সাথে সাথে আমাদের রাজনৈতিক দল, যে দল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হাতে গড়া, তিনি ১৯৫৬ সালে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের পদে থেকে দলকে সংগঠিত করেছিলেন। তার চিন্তা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। কাজেই যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে, সেই দলের অনেক দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে এদেশের মানুষের প্রতি। কাজেই আবার আমাদেরকে সেইভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কেউ যেন মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে না যায়, সেই নির্দেশ দিয়ে মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উন্মুক্ত জায়গায় দলীয় কর্মসূচি পালনের উপর জোর দেন শেখ হাসিনা।
মহামারীর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদিও আমরা স্কুল খুলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা সেটা, এখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব… হঠাৎ করে প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়াতে আমরা ঠিক এখন না করে আমরা রোজার পরে, ঈদের পরে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেব।
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে যা যা করণীয়, সরকার তা করবে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচিও চলমান থাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৭ মার্চ থেকে ২৬ শে মার্চ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন করা হয়েছে।
এই আয়োজনে প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ যোগ দেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। পাশপাশি যেসব রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠান শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছে, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসব শুভেচ্ছা বার্তা যে বাংলাদেশের জনগণের জন্য ‘অত্যন্ত সম্মানের’, সে কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, সব বার্তা সব আমরা শোনাতে পারিনি বা দেখাতে পারিনি, সেটা ছিল সময়ের অভাবে। কিন্তু আমাদের তরফ থেকেও আমাদের এই প্রচেষ্টা থাকবে যে এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে আমরাই করেছি, কাজেই এই সমস্ত বার্তাগুলো আমাদের রক্ষিত আছে, এটা আমি দেব এবং সেগুলো ধীরে ধীরে আমাদের তরফ থেকে আমাদের একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত প্রচার করতে হবে।












