২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সর্বজনস্বীকৃত একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক দলের প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করিয়ে প্রাচীন এ প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ এসোসিয়েশনের নেতারা।
গতকাল রোববার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অপসারণ না করার দাবিতে খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এমন মন্তব্য করেন তারা। এতে জেলার ৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ চেয়ারম্যান ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ এসোসিয়েশন খাগড়াছড়ির সদস্য সচিব ও ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজন চাকমা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জন্ম ও মৃত্যুসনদ, ওয়ারিশ সনদ, বিবাহিত ও অবিবাহিত সনদ, ট্রেড লাইসেন্স প্রদানসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হয়। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অপসারণ করা হলে তৃণমূল পর্যায়ে মানুষ সেবা পেতে বিভিন্ন ভোগান্তিতে পরবে। আমরা গণমাধ্যমে দেখছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অপসারণ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমরা দাবি জানাব, আমাদের অপসারণ না করে, সহযোগী ভাবুন।
বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ এসোসিয়েশন খাগড়াছড়ির আহ্বায়ক ও লক্ষীছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রবিল কুমার চাকমা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও শক্তিশালী কাঠামো। স্বাধীনতার পূর্ববর্তী ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলেও পঞ্চায়েত প্রথা এবং ইউনিয়ন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যক্রম পরিচালিত হত। স্বাধীনতার পরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশের এ প্রাচীন প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ জনগণের আশা ও ভরসার আশ্রয়স্থল।
তিনি বলেন, এই কাঠামো ভেঙে আমলাতান্ত্রিক উপায়ে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করলে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ আশাহত হবেন। ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও চেয়ারম্যানের স্থলে আমলাতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও চেয়ারম্যানগণ জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। ইউনিয়ন পরিষদকাঠামো ভেঙে দিলে দেখা যেতে পারে সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা।
পরে বিভিন্ন দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন জনপ্রতিনিধিরা।