আওয়ামী লীগ নেতা বাবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

এমপি আনার হত্যা

| শনিবার , ১৫ জুন, ২০২৪ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমানের আবেদনে গতকাল শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকতা এস আই জালাল আহমেদ আদালতপাড়ায় সাংবাদিকদের বলেন, রিমান্ড চলাকালে বাবু স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন। পরে তার জবানবন্দি রেকর্ড করতে আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। খবর বিডিনিউজের।

আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আওয়ামী লীগ নেতা বাবুকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। বাবুসহ এর আগে গ্রেপ্তার চরমপন্থি নেতা আমানুল্লা সাঈদ ওরফে শিমুল ভুঁইয়া, তার ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানের মোবাইল ফোনের ফরেনসিক পরীক্ষারও নির্দেশ দেয় আদালত। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ডিবির আবেদনে বলা হয়, আনারকে খুনের পর শিমুল, বাবু, তানভীর ও শিলাস্তি নিজেদের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন রকম তথ্য আদানপ্রদান করেছেন। এছাড়া আসামিদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং মোবাইলে থাকা ছবি, ভিডিওসহ অপহরণ ও খুন সংক্রান্ত কোনো তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে কিনা, সেটি জানা প্রয়োজন।

বাবুকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত হারুন অর রশীদ বলেন, সকল তথ্যউপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ করে আমরা মনে করেছি যে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগ নেতা বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনেছি। তার রিমান্ড চলছে, তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাবু ছাড়াও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হন ঝিনাইদহ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনার। তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাস কলকাতায় জিডি করার পর দুই দেশে তদন্ত শুরু হয়। এরপর ২২ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এমপি আনারকে কলকাতার এক বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরে ভারতীয় পুলিশের দেওয়া তথ্যে বাংলাদেশের পুলিশ শিমুল ভুঁইয়া, তানভীর ভুঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের হোতা শাহীন নেপালের কাঠমান্ডু হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কলকাতার পুলিশ জিহাদ হাওলাদার নামে এক কসাইকে গ্রেপ্তার করেছে। আর শাহীনের সহকারী সিয়াম হোসেন কাঠমান্ডুতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে নেপালের পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সিয়ামের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজার থানা এলাকার কৃষ্ণমাটিতে বাগজোলা খালে নামে কলকাতার সিআইডি। পরে একটি ঝোপের পাশ থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।

কলকাতার সিআইডি পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম লিখেছে, আনারকে খুনের পর নিউ টাউনের বাসা থেকে তার শরীরের টুকরো টুকরো করা মাংস ট্রলি সুটকেসে ভরে বাগজোলা খালে ফেলে দিয়েছিল সিয়াম। সঙ্গে ছিল এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত জিহাদ হাওলাদার। খালে মাংস ফেলে আবার নিউ টাউনের বাসায় ফিরে যান সিয়াম। এর আগে কলকাতার ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকেও মাংসের টুকরা উদ্ধারের কথা জানিয়েছিল পুলিশ। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সেগুলো ভারতের কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। পরে জানানো হয়, উদ্ধার করা মাংসের টুকরা ও হাড়গোড় পুরুষ মানুষের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফ্লাইওভারের নিচে ঈদগাহ ও জানাজার নামাজের স্থান
পরবর্তী নিবন্ধবর্ষা এলো