আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে নগরে বিক্ষোভ সমাবেশ

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২২ মার্চ, ২০২৫ at ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে নগরীতে গতকাল দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। শুক্রবার দুপুরে নগরের নিউমার্কেট মোড়ে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ে থেকে মিছিল নিয়ে আসেন নেতাকর্মীরা। জাতীয় নাগরিক পার্টির ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। এছাড়া সন্ধ্যা সাতটায় নগরের ওয়াসা মোড়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম।

দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক রাসেল আহমেদ, দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ, কার্যনির্বাহী সদস্য জোবায়রুল আলম, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ, যুগ্ম সদস্যসচিব রিজাউর রহমান প্রমুখ। এছাড়া সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘অবিলম্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে করতে হবে’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয় ছাত্রজনতা। জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক রাসেল আহমেদ বলেন, ছয়সাত মাস হয়ে গেছে এখনো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি। গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাব। কিন্তু কেউ যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায় তাহলে বলব, চূড়ান্ত মুক্তির পথ মৃত্যু। প্রয়োজন হলে আরও আবু সাঈদ শহীদ হবে, তবু আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত হতে দেওয়া যাবে না। গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ হয়ে গেছে। এখন শুধু অফিশিয়াল ঘোষণা বাকি। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করলে জুলাই আন্দোলন আবার হবে। ভারতের প্রেসক্রিপশন বাংলাদেশে চলবে না। প্রতিটি দলকে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিষ্কার করতে হবে।

সন্ধ্যায় বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব রিজাউর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক আরিফ মইনুদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইবনে হোসাইন জিয়াদ, মূখপাত্র ফাতেমা খানম লিজা প্রমুখ। এসময় বক্তারা বলেন, সেনানিবাস, ভারত ও কিছু রাজনৈতিক দলের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের শিরায় এক ফোঁটা রক্ত থাকতে আমরা আওয়ামী লীগকে ফিরে আসতে দেব না। দেশের জনগণ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে নতুন বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত জনগণ নেবে। কচুক্ষেত থেকে আর কোনো সিদ্ধান্ত আসবে না।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একদল শিক্ষার্থী। চবির সোহরাওয়ার্দী হল মোড় এলাকায় এই বিক্ষোভ মিছিল হয়। বিক্ষোভরত চবি শিক্ষার্থী শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ প্রথম এ দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। যখনই তারা ক্ষমতায় এসেছে, তখনই ভারতের দালালি করেছে। দেশের মানুষের কোনো উন্নতি করেনি। তিনি আরও বলেন, শুধু জুলাই হত্যাকাণ্ড না, আওয়ামী লীগ এর আগে যতগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সবগুলোর বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। আরেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর একটা ইন্টেরিম সরকার গদিতে বসেছে মানুষের আশাআকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য। সাধারণ মানুষ আশা করেছিল, এতদিন দেশের মানুষ যে অধিকার থেকে দূরে ছিল সে অধিকারগুলো ফিরে পাবে, সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের বিচার হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো বিচার দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের শহীদরা জীবন দিয়েছিল এদেশের মুক্তির জন্য। কিন্তু মুক্তির জন্য যা করা উচিত সরকার সেগুলো করছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপতেঙ্গা সৈকতের বেলাভূমিতে রোজাদারদের আনন্দঘন ইফতার
পরবর্তী নিবন্ধসংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে : তারেক