কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতা দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন। কামরুজ্জামান মাসুদ উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। গতকাল শনিবার দুপুরে কামরুজ্জামান মাসুদের দুধ দিয়ে গোসলের ঘটনার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, বাড়ির ছাদে বসে দুধ দিয়ে গোসল করছেন তিনি। খবর বিডিনিউজের। কামরুজ্জামান মাসুদ দেবিদ্বারের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দলীয় প্রভাব বিস্তারের বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
গতকাল দুপুরে নিজের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে দলত্যাগের ঘোষণা দেন কামরুজ্জামান মাসুদ। এ সময় তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে মামলা–হামলা ছাড়া কিছুই পাননি। সবকিছু থেকে বারবার বঞ্চিত হয়েছেন। পরে নিজেকে ‘পবিত্র’ করতে বাড়ির ছাদে গিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন।
দুধ দিয়ে গোসল করতে করতে কামরুজ্জামান মাসুদ বলেন, সামপ্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে আমি অতিষ্ঠ। তারা সন্ত্রাস বাহিনী ও পুলিশ দিয়ে নির্বিচারে নিরিহ ছাত্র ও সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে। তারা আয়না ঘর বানিয়ে দিনের পর দিন নিরাপরাধ মানুষকে গুম করে রেখেছে। আমি এই দল করে লজ্জিত। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগণের ভোটে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি, দলীয় চেয়ারম্যান নয়। ৪ অগাস্ট ছাত্র–জনতার ওপর ইট–পাটকেল নিক্ষেপ করার অভিযোগ আছে আপনার বিরুদ্ধে–সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমি কখনোই চাইনি ছাত্র–জনতার বিপক্ষে যেতে। ৪ অগাস্ট দেবিদ্বার সদরে কী হবে, তা আমি জানতাম না। আমাকে দলের সিনিয়র নেতারা ভুল বুঝিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে গেছেন। তারা আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশ যেসব ছাত্র–জনতা নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে শোক র্যালি করা হবে। তাই দেবিদ্বার স্বাধীনতা চত্বরে শোক র্যালি ও শোক সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখলাম ছাত্র–জনতার সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আমি দুই গ্রুপের মাঝখানে পড়ে গিয়েছিলাম, আমি কাউকে ইট–পাটকেল মারিনি। আওয়ামী লীগকে ‘চোরের দল’ আখ্যা দিয়ে মাসুদ বলেন, সন্ত্রাস–দুর্নীতিতে ভরপুর আওয়ামী লীগ। আমি এ দলকে ঘৃণা করি। আমি জীবনেও এই দলের নাম মুখে নেব না। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমি সবসময় চেয়েছি আমার এ ফতেহাবাদ ইউনিয়নবাসীর পক্ষে থাকার। তারা আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন।