চট্টগ্রামের ক্রীড়াবিদ তৈরির ‘কারখানা’ আউটার স্টেডিয়ামের চারপাশের সবকিছু দৃষ্টিনন্দন হলেও মাঠের অবস্থা নাজুক। একরকম ডোবায় পরিণত হয়েছে মাঠটি। মাঠের যে অংশ শুকনো রয়েছে, সেখানে ঝুঁকি নিয়ে খেলার চেষ্টা করছে ছেলেরা। তবে মাঠটি খেলার উপযোগী করার ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
এরই মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ আউটার স্টেডিয়ামের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করেছে। কিন্তু মাঠটাকে খেলার উপযোগী করতে হলে তার সংস্কার করতে হবে। এজন্য সিটি কর্পোরেশন একটি টেন্ডার আহ্বান করে। নাদিম চৌধুরী ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই কাজের দায়িত্ব পায়। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আউটার স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য বর্ধন এবং মুক্তমঞ্চের কাজ শেষ করলেও মাঠ এবং ওয়াকওয়ের কাজ শেষ করতে পারেনি। শেষ করার কথা আগামী নভেম্বরে। এখন আশঙ্কার মাঝে আছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। তা হচ্ছে, চসিকের প্রশাসক এই টেন্ডার অব্যাহত রাখবেন কিনা। তার আর্থিক নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে কিনা। না হয় তাদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হবে না। এ প্রসঙ্গে চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন আজাদীকে বলেন, আউটার স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ সিটি কর্পোরেশনের নয়। আউটার স্টেডিয়ামের কাজ করবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা কিংবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। সিটি কর্পোরেশন কেন আউটার স্টেডিয়ামের কাজ করতে যাবে? তিনি বলেন, সরকার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে খেলাধুলার উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা বেশ সচ্ছল। কাজেই আউটার স্টেডিয়ামের সংস্কার যদি করতে হয় তারাই করবে। আউটার স্টেডিয়ামকে ঘিরে সিটি কর্পোরেশনের যে টেন্ডার হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, যদি তার সামনে আসে তখন তিনি দেখবেন। সেই টেন্ডার চলমান থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন এখন দেনায় জর্জরিত। তাছাড়া নরমাল ফান্ডে কোনো অর্থ নেই। কাজেই সেই টেন্ডারের কী হবে সে সম্পর্কে তিনি বলতে পারবেন না।
চসিক প্রশাসক বলেন, আউটার স্টেডিয়াম একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। এখান থেকে অনেক ক্রীড়াবিদ বের হয়েছে। যারা দেশের সম্মান উজ্জ্বল করেছে। তাই আউটার স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য একটি সমন্বিত আন্দোলনের আহ্বান জানান তিনি। যাতে জেলা ক্রীড়া সংস্থা কিংবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এই মাঠটি সংস্কার করে খেলাধুলার উপযোগী করে। তিনি বলেন, আউটার স্টেডিয়াম সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। এই মাঠটি আবার খেলাধুলায় মুখরিত হোক, সেটা আমি মনেপ্রাণে চাই।
এদিকে খেলার উপযোগী করতে নগরীর বেশ কিছু স্কুলের মাঠ চিহ্নিত করে সেসব মাঠ সংস্কারের জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, চসিকের সাবেক মেয়র এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে আউটার স্টেডিয়াম এলাকাকে দৃষ্টিনন্দন স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে সংস্কার প্রকল্পটি পড়েছে অনিশ্চয়তায়। এই মাঠে ছোটখাট কিছু ইভেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল জেলা ক্রীড়া সংস্থার। যাতে মূল স্টেডিয়ামের ওপর চাপ কমে।