আইসিটি-আউটসোর্সিংয়ে জরুরি সেবা চান উদ্যোক্তারা

| রবিবার , ১১ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং আউটসোর্সিং সেবাসহ সফটওয়্যার ও সফটওয়্যার পরিষেবাকে (আইটিইএস) জরুরি সেবাখাতে অন্তর্ভুক্তি করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী ও কর্মীরা। বর্তমান সময়ের ‘লাইফলাইন’ এই খাতকে জরুরি সেবার আওতায় না এনে এটিকে বন্ধ করে রাখলে ভোগান্তিতে পড়বে সাধারণ জনগণ। দেশ হারাবে আন্তর্জাতিক বাজার, এমনটাই বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। খবর বাংলানিউজের।
দেশের সফটওয়্যার ও আইসিটি খাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, গত বছরের লকডাউনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত দেখেন আইসিটি খাত কী অবদান রাখছে। আমরা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে সেগুলো বলছিও। তাহলে যে ‘লাইফলাইন’ এর ওপর পুরো দেশ-অর্থনীতি সচল হয়ে আছে সেটি ‘জরুরি সেবা’র অন্তর্ভুক্ত হবে না কেন? আমরা এটিকে জরুরি সেবার আওতাভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
আইটি-আইসিটি খাতকে জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত না করার ক্ষতিকর দিক কী এমন প্রশ্নের জবাবে আলমাস বলেন, এখন দেখেন সবকিছু প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে। সবকিছুই প্রায় সফটওয়্যারে চলছে। এই সফটওয়্যারকে সচল রাখতে ব্যাক অ্যান্ড সাপোর্ট দিতে হয়। ধরেন একটা হাসপাতাল এখন পুরোপুরি সফটওয়্যার কেন্দ্রিক। সেই সফটওয়্যারকে সাপোর্ট দিতে হয়। এখন যদি এই খাত জরুরি সেবার আওতাভুক্ত না হয় তখন এই কাজগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে সাধারণ মানুষই সব থেকে ভোগান্তিতে পড়বে। এই খাতের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের সহজ চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং খাতের গুরুত্ব তুলে ধরে আলমাস বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা কিন্তু তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম খুলে দিয়েছে। এদের আউটসোর্সিং কাজের বড় অংশ হয় বাংলাদেশ থেকে। আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানগুলো কলসেন্টার, সিকিউরিটি সেটআপ তৈরি করে রেখেছে যেখানে একসাথে কর্মীরা সমন্বিতভাবে তাদের গ্রাহকদের জন্য কাজ করেন। এখন যদি আমাদের দেশে এই সেবা বন্ধ থাকে, কর্মীরা যদি অফিসে আসতে না পারে তাহলে আমরা আন্তর্জাতিক এই গ্রাহকদের হারাবো। কারণ আমরা বন্ধ থাকলেও ভিয়েতনামের মতো দেশ কিন্তু বন্ধ নেই। গ্রাহকেরা সেখানে চলে যাবে। ফলে বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে এবং আমরা আন্তর্জাতিক বাজার হারাবো।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা যারা কল সেন্টারে আছি তারা বিটিআরটির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। এই চিঠিতে আমরা এবং মোবাইল অপারেটরসহ এই খাতের সবাইকে একসঙ্গে একটি অস্থায়ী অনুমতি দেওয়া হয়েছে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ও কর্মীদের চলাচলের জন্য। কিন্তু এটা সাময়িক এবং অস্থায়ী একটা বিষয়। আমরা এই খাতকে স্থায়ীভাবে জরুরি সেবার আওতাভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। আইসিটি খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ইতোমধ্যে আইসিটি বিভাগ থেকে একটি চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়। সেই চিঠিতে সরকার ঘোষিত প্রজ্ঞাপনের ‘খ’ অনুচ্ছেদে সফটওয়্যার ও সফটওয়্যার পরিষেবা (আইসিটি) খাতকে জরুরি সেবা খাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করা হয়। আইসিটি বিভাগের ই-সার্ভিস অপারেশন শাখা থেকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবা রপ্তানি তথা আউটসোর্সিং তথা রপ্তানি কাজে নিয়োজিত বেসিসের সহস্রাধিক কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে জারিকৃত পত্রের (খ) অনুক্রমিকে ‘সফটওয়্যার, আইটি পরিষেবা ও আইসিটি আউটসোর্সিং’ শব্দগুলো অন্তর্ভুক্তকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজীবনের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ অক্সিজেন
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ এশিয়া কাপের জন্য প্রস্তুত