জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় মামলা করায় গাম্বিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস। গতকাল বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা সাক্ষাৎ করেন। এসময় তারা এ মামলা নিয়ে আলোচনা করেন বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিসের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার দেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এ মামলা করেছে এবং তা অব্যাহত রেখেছে। মামলার উদ্দেশ্য হল নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই যে গাম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি এই মামলার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন এবং এটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। আমরা বিষয়টি আবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনায় আনতে চাই। গাম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি ও জনগণ এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের পক্ষে এ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য গাম্বিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি মামলার সফল সমাপ্তির জন্য গাম্বিয়ার অটল প্রতিশ্রুতি ও অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমরা চাই মামলাটি সফল হোক। আপনার সমর্থন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আমাদের জন্য বড় সহায়তা।
মামাদু তাঙ্গারা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ জীবন পেতে সহায়তা করবে। আপনি গাম্বিয়ায় একটি পরিচিত নাম। আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় সবসময় আপনার পাশে থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা কার্যকর করার লক্ষ্যে ঢাকার প্রচেষ্টা তুলে ধরেন। তিনি রাখাইনে মানবিক সহায়তা, বিশেষ করে বাস্তুচ্যুত জনগণের জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন। এছাড়া নতুন করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর বিষয়ে সমর্থন চেয়ে কথা বলেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা আরও গভীর করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা আপনাকে কীভাবে সহায়তা করতে পারি, তা আমাদের জানান। সাক্ষাতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে দুই নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে আফ্রিকার সহিংসতা–প্রবণ কিছু অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে এবং দারিদ্র্য বিমোচনে মাইক্রোক্রেডিট ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন তারা। সাক্ষাতের সময় প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি খালিলুর রহমান ও এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।