আইন সংশোধনে চসিকের ১২ প্রস্তাব

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২০ at ৪:৪৮ পূর্বাহ্ণ

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন আইন, ২০২০ সংশোধনে ১২টি প্রস্তাব দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এতে মেয়র প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক ও কাউন্সিলরের ক্ষেত্রে এইচএসসি পাসের প্রস্তাব করা হয়। একইসঙ্গে ইভিএমে ত্রুটি দেখা দিলে অবশিষ্ট ভোট ম্যানুয়েল বা প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়। এদিকে আজ সোমবার চসিকসহ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবনাগুলো পর্যালোচনায় সভা হওয়ার কথা রয়েছে। বিকেল ৪টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ সভা হবে বলে জানিয়েছেন উপসচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন আইনে নির্বাচন সংক্রান্ত যে সকল বিধান রয়েছে এর মৌলিক বিধানগুলো অক্ষুণ্ন রেখে একটি একীভূত আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন আইন, ২০২০’ নামে প্রস্তাবিত আইনের একটি খসড়াও প্রস্তুত করে নির্বাচন কমিশন। এতে কতিপয় ইংরেজি পদ-পদবী বাংলা শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়। এদিকে মতামত চেয়ে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রেরণ করে প্রস্তাবিত আইনের খসড়াটি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গত মাসে সারাদেশে আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে খসড়াটি প্রেরণ করে এবিষয়ে মতামত চায়। এরপ্রেক্ষিতে গত ৯ নভেম্বর চসিক মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা প্রেরণ করে। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোজাম্মেল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চসিকের প্রস্তাবনা : চসিকের প্রস্তাবনাগুলো পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সংস্থাটি নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত আইনের ধারা ১০ এর উপধারা ২ এ শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে দুটি প্রস্তাব করেন। এতে বলা হয়, বর্তমান আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি ও শিক্ষার গুরুত্ব বিবেচনায় মেয়র, চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ন্যূনতম স্নাতক এবং কাউন্সিলর ও সদস্য ন্যূনতম এইচএসসি পাস না হলে অযোগ্য হবেন।
এছাড়া সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হালনাগাদ বিল বা কর আদায়ের ক্ষেত্রে খেলাপী হলে, সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে অবসর গ্রহণের তিন বছর না হলে এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে পূর্বে নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণ পরবর্তীতে সম্পত্তির বিবরণী দাখিল না করলে অযোগ্য হবেন। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত আইনের ১০ ধারার উপ-ধারা ২ (ঙ)-তে প্রজাতন্ত্রের বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের বা অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকাকে প্রার্থীর অযোগ্যতা বলা হয়। কিন্তু লাভজনক পদ এর সংজ্ঞা নেই। তাই সেখানে লাভজনক পদ এর সংজ্ঞা সংযুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়।
নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত আইনের ৪০ নং ধারার উপ-ধারা ১ এর খ এ ‘দুর্ঘটনাক্রমে ইভিএম ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে করণীয় সম্পর্কে বলা আছে। এ উপ-ধারার ৪ নম্বর উপ-ক্রমিকে বলা আছে, ‘ভোটকেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত হলে কেন্দ্র অধিকর্র্তার সন্তুষ্টি সাপেক্ষ পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যাবে।’ তবে চসিক ইভিএম ক্ষতিগ্রস্ত বা কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে ‘অবশিষ্ট ভোট ম্যানুয়েল বা প্রচলিত পদ্ধতিতে গ্রহণ করা যাবে’ সংযোজন করার প্রস্তাব দেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত আইনের ৭০ ধারার উপ-ধারা ১ -এ ‘ক’ থেকে ‘গ’ পর্যন্ত উপ-ক্রমিক রয়েছে। অবৈধ প্রভাব বিস্তার ও শাস্তি সংক্রান্ত ধারাটিতে ‘ঘ’ উপক্রমিক তথা ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে কেউ যদি ভীতি সৃষ্টি অথবা নির্বাচন ব্যবস্থাকে অনৈতিকভাবে প্রভাবিত করেন তাহলে তা অবৈধ প্রভাব বিস্তার বলে গণ্য হবে’ যুক্ত করার প্রস্তাব দেয় চসিক।
প্রস্তাবিত আইনের ধারা ১৯ এর উপ-ধারা ১ এর নির্বাচন অধিকর্তার চাহিদার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রধানগণ তদনিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর তালিকা সরবরাহের কথা বলা হলেও তদভিত্তিতে তালিকা প্রস্তুতের কথা উল্লেখ নেই। তাই সেখানে নির্বাচন অধিকর্তার সরবরাহকৃত তালিকার আলোকে ভোটকেন্দ্র অধিকর্তা, সহকারী ভোটকেন্দ্র অধিকর্তা এবং ছোট কক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগের তালিকা চূড়ান্ত করে যুক্ত করার প্রস্তাব করে চসিক।
প্রস্তাবিত আইনের ধারা ৪৩ এর অধীন ‘ভোটের দায়িত্ব পালনরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে আবশ্যিকভাবে ভোটকেন্দ্র অধিকর্তাকে সহযোগিতা প্রদানে বাধ্য থাকবে’ সংযোজনের প্রস্তাব করে চসিক।
এছাড়া প্রস্তাবিত আইনের ধারা ৫৯, ৬৫ (১), ৬৬, এবং ৯২ নিয়েও মতামত জানায় চসিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবার নির্মাণ প্রকৌশলীকে পেটালেন বদি!
পরবর্তী নিবন্ধবিরল জিনগত ত্রুটি নিয়ে শিশুর জন্ম চট্টগ্রামে