বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রামের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম জিয়া হাবীব আহসান বলেছেন, আমাদের দেশে অনেক কঠিন কঠিন আইন আছে। আইন যদি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে আইন কড়াকড়ি করে কোনো লাভ হবে না। সরকারের এই আইন যদি কার্যকর করা না হয় তাহলে এই আইন ফানুসে পরিণত হবে। তিনি বলেন, এখানে ধর্ষণের কোনো মামলার বিচার হবে না। ধর্ষণ কমবে না। বাংলাদেশে ২৫ শতাংশ আদালতে বিচারক নেই। বিচারক না থাকার কারণে বছরের পর বছর ধরে মামলা ঝুলে থাকছে। দীর্ঘদিন মামলা ঝুলে থাকার কারণে মামলার সাক্ষীরা সাক্ষী দিতে আসে না, সাক্ষীরা ম্যানেজ হচ্ছে, মামলার আলামত নষ্ট হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে আসামিরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ১০/২০ বছর ধরে একটি মামলা চলতে থাকলে অনেক সাক্ষী তো মারা যায়। তাহলে এই মামলার সাক্ষী ছাড়া প্রমাণ করবেন কিভাবে?
এছাড়া ধর্ষণ মামলার এজাহারগুলো দুর্বল রাখা হয়। প্রভাবশালী আসামিদের ছত্রছায়ায় এই ধরনের মামলার এজাহার দুর্বল করা হয়। অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ধর্ষণ কমাতে হলে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। সাক্ষী, মামলার আলামত, তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত উপস্থাপন করতে হবে। ত্রিশ দিনের মধ্যে মামলার বিচারকার্য শেষ করতে হবে। এছাড়া মামলার তদন্তে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
শুধু আইন করে কখনো ধর্ষণ কমানো যাবে না। আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আইন কার্যকর বা আইনের বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ধর্ষণের মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। তিনি বলেন, ধর্ষণ মামলা যদি কমাতে চান, তাহলে প্রথমে আপনাকে দ্রুত বিচারক নিয়োগ দিতে হবে। বছরে কোনো সময় বিচারকের পদ শূন্য থাকতে পারবে না। যারা তদন্ত করবেন, তদন্ত কর্মকর্তা ১৫ দিন বা সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। একমাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে, একমাসের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে। তদন্ত এবং বিচার কার্য যদি সঠিকভাবে করা না হয় তাহলে যতই আইন করুন কোনো লাভ হবে না বলে জানান এই আইনজীবী। এখানে আইন কড়াকড়ির সাথে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাডভোকেট এ এম জিয়া হাবীব আহসান।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে একসময় এসিড নিক্ষেপের ঘটনাগুলো প্রায় সময় ঘটত। কিন্তু বর্তমানে এসিড সন্ত্রাস বন্ধ হয়ে গেছে। এসিড সন্ত্রাস আইনের মামলাও কমে গেছে। এর পেছনে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, এসিড সন্ত্রাস আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা।