চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পাঁচ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কমিটির সদস্যরা আগামী ৪৫ দিন হাসপাতালের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবেন। গত ৯ অক্টোবর গঠিত কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ–পরিচালককে সদস্য সচিব করা হয়। এছাড়া সদস্য হিসেবে সিএমপি কমিশনারের প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি এবং চট্টগ্রাম হালিশহর সেনানিবাস অধিনায়ক ৩৩ এডি ব্যাটারি আর্টিলারির প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবেন।
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত অফিস আদেশে বলা হয়, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন (নম্বর–১৬১০/২৩) চলমান থাকায় এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হাসপাতালে আজীবন সদস্যবৃন্দ, ডাক্তার, কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ৫ সদস্যের এই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
জানা গেছে, গত ৫ অক্টোবর হাসপাতালে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ হয় ‘হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ’ ব্যানারে। ১৪ দফা দাবি উপস্থাপন করেন তারা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে হাসপাতালের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আমান উল্লাহ আমান ও পরিচালক ডা. নওশাদ আজগর চৌধুরী পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে কমিটির বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের বরাবর অভিযোগও দেন। এরপর ৭ অক্টোবরও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। ওইদিন পুলিশ দুই কর্মচারীকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়। সর্বশেষ গতকাল বিক্ষোভ হয়।
সর্বশেষ গত শনিবার সকাল ৯টা থেকে প্রায় পৌনে ১১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন হাসপাতালের নার্সসহ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। তারা জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পদত্যাগ ও প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। দাবি আদায়ে তারা সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিরও ঘোষণা দেন। ওইদিন বিকেলে সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসক এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে চিকিৎসা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে এবং রোগীর সমস্যা হয় এমন আন্দোলন থেকে সরে আসার নির্দেশনা দেন। বিষয়টি মেনে নেন আন্দোলনকারীরা।
সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম আজাদীকে জানান, আন্দোলন নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় উদ্বিগ্ন। বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায় তার পথ খুঁজে বের করার জন্য মন্ত্রণালয় তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।