আইনশৃঙ্খলা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু দেখছে না বিএনপি

সিইসির সঙ্গে বৈঠক আসন ভাগাভাগির আনুষ্ঠানিক আলোচনা এখনও হয়নি : নজরুল ইসলাম খান

| সোমবার , ১৮ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ‘উদ্বেগ’ থাকলেও ‘দুশ্চিন্তার’ কিছু দেখছে না বিএনপি। দলটি বলছে, পুলিশ বাহিনীর দুর্বলতার কারণে এ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তবে চারপাঁচ মাসের মধ্যে তা কেটে যাবে।

গতকাল রোববার বিকালে নির্বাচন ভবনে গিয়ে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ছাড়াও বৈঠকে একজন নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। খবর বিডিনিউজের।

প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করার পর ব্রিফিংয়ে এসে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা আলোচনায় যতটুকু বুঝেছি যে, তারা (ইসি) নির্বাচনের প্রস্তুতি যথাযথভাবে নিচ্ছে। এখনও তাদের কিছুটা উদ্বেগ আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে। তবে তারা মনে করেন এবং আমরাও মনে করি, দেশে এখন পুলিশের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকা অপেক্ষাকৃত দুর্বল। আগে যে সরকার ছিল, তারা পুলিশকে এমনভাবেই ব্যবহার করেছে যে, তারা নিজেরাই তাদের আচরণের জন্য লজ্জিত এবং সেজন্যই এ দুর্বলতা।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, কিন্তু এটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। নির্বাচনের আরও কয়েক মাস দেরি আছে। কাজেই এ সময়ের মধ্যে এটারও কিছু পরিবর্তন হবে। আরেকটা বিষয় হলো, সেনাবাহিনী এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সহযোগিতা করছে। নির্বাচন কমিশন থেকে যেটা বলা হলো, নির্বাচনের সময় যদি প্রয়োজন হয়, তারা আরও সেনা মোতায়নের অনুরোধ করবেন। বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা জানি, নির্বাচন কমিশন কোনো অনুরোধ করলে সরকারকে সেটা রাখতে হয়। কাজেই নির্বাচনকালীন সময়ে ওই বিষয়েও আর খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ দেখছি না।

নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরও বর্তায় বলে মনে করেন এ বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, আমাদেরও চেষ্টা থাকতে হবে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি না ঘটে; দলের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও সমর্থকরা যেন শান্তিপূর্ণভাবে উৎসাহ নিয়ে ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

বৈঠকে নির্বাচনি আচরণবিধি, প্রবাসী ভোটারদের পোস্টাল ভোটিং ও সীমানা পুনর্নির্‌ধারণ নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা জানান নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, আচরণবিধির বিষয়ে ইসির মতামতের সঙ্গে বিএনপির সুপারিশের তেমন তফাত নেই। আর তারা যেভাবে সীমানা নির্ধারণ করেছেন এবং কোনো জায়গায় যদি ব্যত্যয় হয়, সেটার জবাব তো ইসি দেবে। কোনো আসন নিয়ে আপত্তি থাকলে, তা আমাদের দলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ আকারে ইসিকে জানিয়েছেন।

এবার একক প্রার্থীর আসনে ‘না’ ভোট ফেরাতে চায় নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এটা একটা নতুন প্রস্তাব এবং এটা আমাদের প্রস্তাব না। যারা প্রস্তাব করেছেন, এ ব্যাপারে তাদের যদি জিজ্ঞাসা করেন তাহলে ভালো হয়। এছাড়া আরপিও নিয়ে আমাদের দলে আলোচনা করে মতামত দিব। ব্যক্তিগত মতামত আমি দিতে পারব না।

ফেব্রুয়ারিতে ভোট নিয়ে শঙ্কার কথা বলছে কোনো কোনো দল। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা শনিবার এ কথাও বলেছেন যে, সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে গণপরিষদের নির্বাচন হতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় বলেছেন নির্বাচন হবে; নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারপরে কীসের ভিত্তিতে কোন ক্ষমতা বলে উনি বললেন, এ ব্যাপারে বোধ হয় তাকে জিজ্ঞেস করলে ভালো হয়।

আসন ভাগাভাগির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এ নিয়ে কোনো আলোচনা আমাদের দলে এখনও হয় নাই। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছিলেন যে, আমরা যারা যুগপৎ আন্দোলনে ছিলাম, তারা সবাই মিলে আমরা একসঙ্গে থাকব এবং রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করব। আসন ভাগাভাগির কোনো আলোচনা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে হয় নাই।

নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে যাওয়ার কোনো আলোচনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো তফসিল হয় নাই। আসন নিয়ে আলোচনা হয়ত তফসিলের পরে হবে। এখন এ নিয়ে আলোচনার কোনো অবকাশ নাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযারা গণতন্ত্রের পথে বাধা সৃষ্টি করছে তারাও পালাবে : শাহাদাত
পরবর্তী নিবন্ধশুরু হল ‘নতুন কুঁড়ি’র নিবন্ধন