আইটি দক্ষতা কাজে লাগিয়ে গ্রাহকের ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ

ব্যাংক কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

আইটি বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা ছিল পূবালী ব্যাংক সন্দ্বীপ শাখার কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের। তা কাজে লাগিয়ে তিনি ১১ জন গ্রাহকের ১১টি ব্যাংক হিসাব থেকে ৭৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী এর আগে তিনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের আইডি ও পাসওয়ার্ড কৌশলে জেনেও নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম২ এ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন একই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক। আবুল কালাম আজাদ পূবালী ব্যাংক সন্দ্বীপের শিবেরহাট শাখায় সিনিয়র মেসেঞ্জার কামগার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন (বর্তমানে চাকরিচ্যুত)। তিনি সন্দ্বীপের মাস্টারের বাড়ির হাজী মো. ইব্রাহীমের ছেলে।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম২ এর উপপরিচালক মো. আতীকুল আলম আজাদীকে বলেন, গ্রাহকদের পক্ষ থেকে থানায় করা জিডি এবং দুদক প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পূবালী ব্যাংক কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনি নানা কৌশলে ১১ জন গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আইটি বিষয়ে তার বিশেষ দক্ষতা ছিল। আত্মসাৎকর্মে তিনি তা কাজে লাগিয়েছেন। যা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ () ও ৪ () ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ () ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

মামলার এজহারে বলা হয়, অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদ সিনিয়র ম্যাসেঞ্জার কাম গার্ড হিসেবে পূবালী ব্যাংক সন্দ্বীপের শিবেরহাট শাখায় কর্মরত সময়ে অর্থাৎ ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি সময়ের মধ্যে ১১ জন ব্যাংক গ্রাহকের ৭৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এরমধ্যে গ্রাহক রাশেদা বেগমের ব্যাংক হিসাব থেকে ১ লাখ ২২ হাজার টাকা, সুরমা বেগমের ব্যাংক হিসাব থেকে ১১ লাখ ১২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি কৌশলে গ্রাহকদের কাছ থেকে তাদের স্বাক্ষরিত চেক নিয়ে নেন। এছাড়া ব্যাংক কর্মকর্তাদের আইডি ও পাসওয়ার্ড কৌশলে জেনে তা ব্যবহার করে কনক দাস নামের গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব থেকে ৩৯ লাখ টাকা, মো. আবু তাহেরের হিসাব থেকে ৬ লাখ টাকা, দেলোয়ারের হিসাব থেকে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা, নিলুফা খানের হিসাব থেকে ৩ লাখ টাকা, আফরিন সুলতানা সুমির হিসাব থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, শাহজাহানের হিসাব থেকে ৩ লাখ টাকা, সুজনের হিসাব থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, আহমেদ উল্লার হিসাব থেকে ১ লাখ টাকা ও মো. ইউনুসের ব্যাংক হিসাব থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও আত্মসাৎ করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদ ২০১২ সালে এইচএসসি পাশ করে ২০১৩ সালে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে পূবালী ব্যাংক সন্দ্বীপ শাখায় ম্যাসেঞ্জার কাম গার্ড হিসেবে এবং ২০১৪ সালে নিয়মিত কর্মচারী হিসেবে যোগদান করে। ২০১৫ সালে তার চাকরি স্থায়ী হয়। ২০১৯ সালের ১লা জানুয়ারি তিনি সিনিয়র ম্যাসেঞ্জার কাম গার্ড পদে পদোন্নতি পান। উক্ত পদে তার দায়িত্ব ছিল বিভিন্ন ব্যাংক এবং পূবালী ব্যাংকের অন্যান্য কালেকশনের চেক সংগ্রহ করা, সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রার মেইনটেইন করা, প্রতিদিনের ভাউচার, হিসাব খোলার ফর্ম শেলাই ও সংরক্ষণ করা এবং ব্রাঞ্চ প্রধানের নির্দেশিত অন্যান্য কাজ করা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাধ্যমিকে ভর্তির আবেদন ২৪ অক্টোবর থেকে
পরবর্তী নিবন্ধস্মার্ট জেলা উদ্ভাবন চ্যালেঞ্জে প্রথম চট্টগ্রাম