কিছুদিন ধরে চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি উপজেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এখনো ব্যাপক হারে ছড়িয়ে না পড়লেও আগাম হিসেবে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়।
সর্বশেষ ডায়রিয়ার প্রকোপের বিষয়টি উল্লেখ করে এর কারণ অনুসন্ধানে আইআইডিসিআরের (রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) পরিচালক বরাবরও চিঠি দেয় সিভিল সার্জন কার্যালয়। সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর স্বাক্ষরে গত ৫ মে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়। সিভিল সার্জনের চিঠির প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামে ডায়রিয়ার প্রকোপের কারণ অনুসন্ধানে ১২ সদস্যের একটি টিম পাঠানোর কথা জানিয়েছে আইইডিসিআর। আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীনের স্বাক্ষরে ৬ মে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইইডিসিআরের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জাহিদুর রহমানকে টিম সুপারভাইজার করে ১২ সদস্যের ওই টিম গঠনের কথা বলা হয় চিঠিতে। ডাক্তার, গবেষক ছাড়াও মেডিকেল টেকনোলজিস্টও রাখা হয়েছে টিমে। মাঠ পর্যায়ে তদন্ত কার্যক্রম শেষে কর্মস্থলে ফেরতের তিন কর্মদিবসের মধ্যে উক্ত টিমকে পরিচালক বরাবর রিপোর্ট প্রদান করতে হবে মর্মে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় আইইডিসিআরের ১২ সদস্যের এ টিম চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে। এই তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী আজাদীকে বলেন, ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিলেও এখনো ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েনি। এরপরও আমরা আগাম পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এর কারণ অনুসন্ধানে আইইডিসিআরকে চিঠি দিয়েছিলাম। তারা টিম পাঠিয়েছে। পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণ অনুসন্ধানেই মূলত আইইডিসিআরের এ টিম চট্টগ্রামে এসেছে। সোমবার (আজ) তারা আমার সাথে বসবেন। এরপর মহানগর ও উপজেলার বেশ কিছু হাসপাতালে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন। রোগীদের সাথে কথা বলবেন। রোগীদের বাসা–বাড়িতেও যাবেন। নমুনা সংগ্রহসহ সার্বিক অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এর জন্য যে কয়দিন সময় লাগে, তারা সে কয়দিন কাজ করবেন। তাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষ করতে অন্তত এক–দুই সপ্তাহ লাগতে পারে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ডায়রিয়ার প্রকোপের কারণ অনুসন্ধানে আইইডিসিআরের এই টিম কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করতে পারে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, বিআইটিআইডিসহ প্রকোপ দেখা দেয়া চার উপজেলার (বোয়ালখালী, আনোয়ারা, পটিয়া ও চন্দনাইশ) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে গিয়ে রোগীদের সঙ্গে কথা বলবেন। তথ্য সংগ্রহ করে রোগীদের বাসা–বাড়িতেও যাবেন। বাসা–বাড়িতে ব্যবহৃত পানির নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। পরে এ বিষয়ে সিভিল সার্জনকে বিস্তারিত জানাতে পারেন।