আইআইইউসি’র নবগঠিত বোর্ড অব ট্রাস্টিজ’র প্রথম সভা অনুষ্ঠিত

| সোমবার , ৮ মার্চ, ২০২১ at ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ

আইআইইউসি’র নবগঠিত বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) এর প্রথম সভা গত ৬ মার্চ বেলা ১১টায় কুমিরাস্থ আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) ক্যাম্পাসে ট্রাস্টের সভাপতি, সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, বায়তুশ শরফের পীর মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী, খাদিজাতুল আনোয়ার সানি এমপি, ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মো: হেলাল উদ্দিন নিজামী, চবি’র প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছালেহ্‌ জহুর, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, রিজিয়া সুলতানা চৌধুরী, মিয়া মুহাম্মদ ইসমাইল, মো: আবদুর রহিম, মো: খালেদ মাহমুদ, প্রফেসর ড. মো: ফসিউল আলম, মুহাম্মদ বদিউল আলম, প্রফেসর ড. সিরাজুল করিম প্রমুখ।
সভার বিষয়ভিত্তিক আলোচনার পূর্বে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু রেজা নদভী এমপি উপস্থিত বিওটি সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তিনি আইআইইউসি প্রতিষ্ঠালগ্নে বায়তুশ শরফের পীর মরহুম আল্লামা শাহ মুহাম্মদ আবদুল জব্বারের (রহ.) অবদান তুলে ধরে বলেন, আইআইইউসি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল উম্মাহর সেবা করা, যা কোনো ধর্ম-বর্ণ কিংবা রাজনৈতিক দলের জন্য নয়। সেই অনুসারে ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত আইআইইউসি পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর জামায়াত ইসলামী আইআইইউসিকে তাদের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অর্থায়নে ব্যবহার করা হয়েছে, যা ছিল সম্পূর্ণ অনৈতিক ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বিরোধী। তিনি আইআইইউসি’র নবগঠিত বোর্ড অব ট্রাস্ট গঠন ও অনুমোদন দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং আইআইইউসিকে আদর্শিক ও মূল্যবোধ ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠনের লক্ষ্যে সরকারের সহযোগিতা আশা করেন। তিনি বলেন, আইআইইউসি’র উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার এবং পরিচালক (অর্থ ও হিসাব)-কে নবগঠিত বিওটি’কে পূর্ণ সহযোগিতার নিমিত্তে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। নবগঠিত বিওটি’র সভার বিজ্ঞপ্তি বোর্ডে দিয়ে প্রচার করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছিল। প্রশাসনের উক্ত কর্মকর্তাবৃন্দ এ অনুরোধ শুধু প্রত্যাখ্যান করেননি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন অনুষদের দরজা তালাবদ্ধ করে দিয়ে অসহযোগিতা করেছেন। তাছাড়া উপাচার্য বিনা কারণে আইআইইউসি মার্চের ১১ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছেন। যার লক্ষ্য হলো, নবগঠিত বিওটিকে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনায় বাধাগ্রস্ত করা। বোর্ড অব ট্রাস্টের সভা শেষে প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন, আইআইইউসি কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের সম্পত্তি নয়। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছে। যা কখনোই উচিত নয়। প্রতিষ্ঠানটিকে জামায়াত-শিবির তাদের নিজস্ব ঘাঁটি হিসেবে মনে করে। এখানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থেকে শুরু করে ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য পর্যন্ত অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরের অনুসারী। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন ট্রাস্টি বোর্ডকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম রক্ষা করতে। পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানকে জামায়াতমুক্ত করবো। তিনি আরো বলেন, জামায়াত-শিবিরের অর্থদাতা, যুদ্ধাপরাধী মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি মীর কাসেম আলীর আত্মীয় আ.ন.ম শামসুল ইসলাম সভাপতি হিসেবে ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক কে.এম গোলাম মহিউদ্দিন এ প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি বোর্ডের সহ-সভাপতি ও সিন্ডিকেটের চেয়ারম্যান। এরাই জামায়াতি ঘাঁটি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। নবগঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের প্রথম সভায় পূর্বের সদস্যরা দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে সভায় অংশগ্রহণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অফিসের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। নতুন ট্রাস্টি বোর্ডের সভা আহ্বানের খবর জানতে পেরে কোনো রকম অনুমতি ছাড়া ৬ মার্চ থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত সকল অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৭ মার্চ কি- তারা জানেন না? পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা কোনোরকমে ট্রাস্টি বোর্ডের সভা পরিচালনা করেছি। তিনি বলেন, আমরা অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনবো। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশের ইমেজ সবার আগে : প্রধান বিচারপতি
পরবর্তী নিবন্ধআইটি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান মেয়রের