পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক লাইভ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র বাংলা সংস্করণ এ খবর জানিয়েছে। এ সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে যেসব মানুষ এই টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন, টিকার অভাবে তাদের একটা বড় অংশ দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারছেন না। এটা আমাদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে। আমরা যখন অন্য জায়গা থেকে ভ্যাকসিন পাবার চেষ্টা করছি, তখন আমেরিকার অন্য দেশকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা দেবার সিদ্ধান্ত ঘোষণার খবর আমরা শুনেছি। আমরা আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে টিকা চেয়ে চিঠি লিখেছি। তিনি বলেন, আমেরিকা বাংলাদেশকে কিছু ডোজ টিকা দিতে রাজি হয়েছে। তবে সমস্যা হল এফডিএ (আমেরিকার খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন) এই অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের রপ্তানি অনুমোদন করতে অনেক সময় নিচ্ছে।’ তবে যেহেতু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যাকসিন ইতোমধ্যেই অনুমোদন করেছে, তাই ‘এফডিএ এটি অনুমোদন না করলেও, আমেরিকা যদি টিকার চালান পাঠাতে রাজি হয়, বাংলাদেশ অবিলম্বে তা নিতে রাজি আছে, বলে সিএনএন নিউজ চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবদুল মোমেন।
এদিকে দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশকে আরও ৬ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা উপহার দেওয়ার কথা জানিয়েছে চীন সরকার। ঢাকায় চীনা দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ফোনালাপের পর চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দ্বিতীয় দফায় টিকা উপহার পাঠানোর ঘোষণা দেন। তবে এই টিকা কবে নাগাদ বাংলাদেশে পৌঁছাতে পারে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দেয়নি চীনা দূতাবাস। খবর বিডিনিউজ ও বিবিসি বাংলার।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতিতে নিবিড় মনোযোগ রাখছে চীন। জরুরি মুহূর্তে টিকার সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকতেই উপহার পাঠানোর এ সিদ্ধান্ত। এর আগে ১২ মে বাংলাদেশের কাছে প্রথম দফা উপহারের ৫ লাখ ডোজ টিকা হস্তান্তর করে চীন। সিনোফার্মের তৈরি ওই টিকা আগামী সপ্তাহ থেকে প্রয়োগ শুরু হবে এবং করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সম্মুখসারির যোদ্ধারা অগ্রাধিকার পাবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এর আগে জানিয়েছিলেন। মহামারীর প্রথম ঢেউ সামাল দেওয়ার মধ্যেই গত বছরের নভেম্বরে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অঙফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে চুক্তি করে বাংলাদেশ। দুই চালানে সেরাম ইনস্টিটিউট ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাঠানোর পর ভারত সরকার রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশ বেকায়দায় পড়ে। তাতে ফেব্রুয়ারিতে চালু হওয়া টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ হওয়ার শঙ্কা জাগায় এপ্রিলে সরকার অন্য উৎস থেকে টিকা পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে। এর অংশ হিসেবে এপ্রিলের শেষে এবং মে মাসের শুরুতে রাশিয়ার স্পুৎনিক-ভি এবং চীনের সিনোফার্মের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় সরকার।










