করবিধি-১৯৮৬ বাতিলের দাবিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে গত রোববার এ স্মারকলিপি দেয়া হয়। এতে করবিধিটির আলোকে নগরে যে গৃহকর আদায় প্রক্রিয়া চলছে তা থেকে সিটি মেয়রকে বিরত রাখার অনুরোধ করা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, দেশের কোনো সিটি কর্পোরেশন বাড়ি ভাড়ার উপর হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করেছে এমন নজির নাই। অতীতে চট্টগ্রামে কোনো মেয়র এই অজনপ্রিয় আইনটি কার্যকর করার চেষ্টা করেননি। স্মারকলিপিতে বলা হয়, চসিক পঞ্চবার্ষিকী কর নির্ধারণের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক অংকের গৃহকর ধার্য এবং কর্পোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর পুনর্মূল্যায়নের নামে ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ চট্টগ্রামবাসী। সুপরিকল্পিত এই এসেসমেন্ট বাতিলের দাবিতে নগরবাসী চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের ব্যানারে ২০১৬ সাল থেকে ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছে। আন্দোলনের ফলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বাধ্য হয়ে গৃহকর আদায় কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। করদাতাদের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেয়ার পরপরই এই অস্বাভাবিক কর প্রদানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জনগণের বিরোধিতার বিষয়টি গোপন করে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেন। ফলে আবারও চট্টগ্রামের রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এতে করে সরকারের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং চট্টগ্রামের স্থানীয় নাগরিকদের কাছে সরকার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। আরো বলা হয়, চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ পর্যন্ত গৃহকর কমানোর নামে ব্যাপক হারে ঘুষ গ্রহণ করেন। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ভাড়ার উপর মূল্যায়নকৃত অস্বাভাবিক গৃহকর আপিলের মাধ্যমে কমানোর প্রক্রিয়ায় এ কর্মকর্তারা প্রায় ২০০ কোটি টাকা ভবন মালিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন। কর্পোরেশনের জন্ম নিবন্ধন, জাতীয়তা, মৃত্যু সনদের মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে ঘুষ প্রদান ছাড়া নাগরিকদের কোনো উপায় থাকে না। স্মারকলিপি প্রদান কালে উপস্থিত ছিলেন সুরক্ষার সভাপতি মোঃ নুরুল আবছার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুহম্মদ আমির উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস পপি, সুরক্ষার নেতা মুজিবুল হক, ছৈয়দ আহমদ, শহীদুল হক স্বপন, মীর মোঃ ইসলাম, আরশাদ হোসেন, নজরুল ইসলাম, আবদুল আজিজ, সাজ্জাদ হোসেন জাফর, মোজাম্মেল হক জ্যাকি, মুন্না খান, মোঃ হাসান। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ।