জিয়াউর রহমানের অধীনে ‘জেড ফোর্স’ এর হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া হাফিজউদ্দিন আহমেদ বিএনপিতে নিজের অবস্থান নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেন। একাত্তরে মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্স গঠনের দিনটি স্মরণে গতকাল বুধবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে নিজের হতাশার প্রকাশ ঘটান বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, জেড ফোর্সে সময়নায়কদের মধ্যে, সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে চারজন বিএনপিতে ছিলেন। একজন কর্নেল আকবর হোসেন, তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন, অন্য দুইজন কর্নেল অলি আহমদ ও মেজর শমসের মবিন চৌধুরী, তারা অন্য দলে চলে গেছেন। আমি একমাত্র কোনোক্রমে অনেক অস্বস্তি নিয়ে এখনও টিকে আছি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিএনপির মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা কমিটির উদ্যোগে এই আলোচনা হয়। খবর বিডিনিউজের।
বীরবিক্রম হাফিজ বলেন, জিয়াউর রহমানকে আমরা সবাই একজন মহান রাষ্ট্রপতি রূপে জানি, তিনি যে কত কৌশলী সমরনায়ক ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সামরিক অঙ্গনে তিনি একজন তেজদীপ্ত কমান্ডার ছিলেন। জেড ফোর্স স্বাধীনতা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সাহসিকতা দেখিয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, আত্মদানে ও শহীদের সংখ্যাও সবচাইতে বেশি এই জেড ফোর্সে।
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী সব সময় স্বাধীন রাখার কৃতিত্বও জেড ফোর্সের বলে মন্তব্য করেন তিনি। রৌমারীতে জিয়াউর রহমানে সাথে আমি গিয়েছি, আমাদের অন্যান্য কমান্ডাররা গিয়েছে। সেখানে আমরা ডাক চালু করেছি, একটি সিভিল প্রশাসনও চালু করেছিলাম। এই রৌমারী নয়টি মাস মুক্ত রাখার কৃতিত্ব দাবি করতে পারে জেড ফোর্স। ময়মনসিংহ, জামালপুর, সিলেট অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে জেড ফোর্সের বিভিন্ন অভিযানের ঘটনা তুলে ধরেন হাফিজ।
দুঃখের বিষয় আমরা যারা বিএনপি করি, আমরা নিজেরাই জানি না। সিলেটে কোথায় যুদ্ধ হয়েছে- আমি সিলেটের নেতৃবৃন্দকে জিজ্ঞাসা করেছি। তারাও বলতে পারেনি। এই হলো বাস্তবতা। যখন আমরা ক্ষমতায় থাকি, তখন আমরা জীবিত নেতাদের তোষামোদে ব্যস্ত থাকি। যখন ক্ষমতায় থাকি, তখন জেড ফোর্সের নামও শোনা যায় না। এখন কিছুটা শুনতে পারছি। সেজন্য দলের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটিতে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বলেন হাফিজ।
মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা কমিটির আহ্বায়ক শাহজাহান ওমর বীরউত্তমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান আলোচনায় অংশ নেন।