একটি কাগজে লেখা কয়েকটি লাইন– অথচ সেটিই অনেক সময় নির্ধারণ করে দেয় একজন মানুষের চিকিৎসা, কখনও কখনও জীবনও। এই কাগজের নাম প্রেসক্রিপশন। আর এই প্রেসক্রিপশনই আজ বহু রোগীর জন্য বিভ্রান্তি আর ভোগান্তির উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ একটাই, ডাক্তারদের অস্পষ্ট হাতের লেখা। ফার্মেসিতে গেলে প্রায়ই দেখা যায়, ওষুধ বিক্রেতা প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে চোখ কুঁচকে একেকটা শব্দ আন্দাজ করছেন। কখনও ভুল পড়ছেন ওষুধের নাম, কখনও মাত্রা। রোগী তখন অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকে। ভাবুন, জীবনরক্ষার নির্দেশনা যদি আন্দাজে পড়তে হয়, তাহলে বিপদ কতটা বড় হতে পারে!
আমরা প্রযুক্তির যুগে আছি। এখন অনেক দেশেই ডাক্তাররা হাতে লেখেন না, কম্পিউটারে টাইপ করে ই–প্রেসক্রিপশন দেন। এতে ভুল কমে, রোগীর বিভ্রান্তি দূর হয়। বাংলাদেশেও চাইলে এই ব্যবস্থা চালু করা যায়। মেডিকেল কলেজগুলোতে লেখা ও যোগাযোগ দক্ষতা শেখানোর ব্যবস্থা থাকলে, ভবিষ্যৎ চিকিৎসকরা হয়তো আরও দায়িত্বশীল হবেন। একজন ডাক্তার যখন প্রেসক্রিপশন লেখেন, সেটি কেবল এক টুকরো কাগজ নয়– সেটি একজন রোগীর জীবনের দিকনির্দেশনা। তাই সেটি যতটা বৈজ্ঞানিক, ততটাই মানবিক দায়িত্বও বটে। একটি স্পষ্ট লেখা রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে, একটি অস্পষ্ট লেখা সেটিকে বিপন্নও করতে পারে। চিকিৎসা শুধু রোগ সারানো নয়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও এর অংশ। এখন সময় এসেছে, চিকিৎসকের কলম যেন স্পষ্টতার প্রতীক হয়, বিভ্রান্তির নয়।
কানিজ ফাতেমা নূরী
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ, বাংলা বিভাগ।