কক্সবাজারে পৃথক অভিযান চালিয়ে ‘অস্ত্রের বিনিময়ে মাদকের চালান’ লেনদেন চক্রের তিন সদস্য এবং সীমান্ত দিয়ে মাদকের এক শীর্ষ পাচারকারিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এসময় আটকদের কাছ থেকে দুই লাখ ইয়াবা, বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব–১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ব্যাটালিয়নটির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
আটকরা হল– টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের হ্নীলা পূর্ব জাদিমুরা ইমাম হোসেনের ছেলে ইয়ামিন আরাফাত ওরফে কালু (২১), হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকার মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে আবুল কাশেম (৩৫), খুলনা জেলার সদর উপজেলার আবুল কালামের ছেলে সাকির আহম্মদ সাগর (২৬) এবং দাকোপ উপজেলার সুঁতারখালী ইউনিয়নের গুনারী এলাকার নওশের মোড়লের ছেলে মো. নুরুজ্জামান (২৮)। এদের মধ্যে ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু শীর্ষ মাদক কারবারি এবং অন্যরা অস্ত্রের বিনিময়ে মাদকের চালান লেনদেন চক্রের সদস্য।
র্যাব জানিয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্রসহ নানা অভিযোগে টেকনাফসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সোমবার রাতে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং এলাকায় অস্ত্রের বিনিময়ে মাদকের চালান লেনদেনের জন্য কতিপয় লোকজন অবস্থান করছে খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ৪–৫ জন লোক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে আটকদের হেফাজত থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুইটি গুলি পাওয়া যায়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, তারা তিনজনই মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। তারা খুলনা থেকে অস্ত্রের চালান এনে টেকনাফের বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে তুলে দিতো। চক্রটি নগদ টাকার পাশাপাশি মাদকের বিনিময়েও এসব অস্ত্র লেনদেন করতো।
এদিকে সোমবার রাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব জাদিমুরা এলাকায় নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে মাদকের বড় একটি চালান পাচারে খবরে পৃথক অভিযান চালিয়ে দুই লাখ ইয়াবাসহ ইয়াছিন আরাফাত ওরফে কালু এক শীর্ষ পাচারকারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান র্যাব–১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। তার বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, আটক ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু শীর্ষ মাদক কারবারি ও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচারকারি চক্রের অন্যতম হোতা। সীমান্তে মাদকপাচারে তার নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। চক্রটি সীমান্ত দিয়ে মাদকের বড় বড় চালান নিয়ে এসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করতো। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে টেকনাফ থানায় পৃথকভাবে মামলা করা হয়েছে বলে জানান লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন।