অস্ট্রেলিয়ায় ৮০ লাখ মানুষকে আলো নেভানোর আহ্বান

| শুক্রবার , ১৭ জুন, ২০২২ at ৯:১১ পূর্বাহ্ণ

অস্ট্রেলিয়ায় জ্বালানি সংকটের মুখে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের বাড়িগুলোতে আলো নিভিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন। এ রাজ্যেই আছে দেশটির বৃহত্তম সিডনি নগরী। বৃহস্পতিবার জ্বালানি মন্ত্রী বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা থাকলে মানুষের প্রতিদিন সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টা বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ রাখা উচিত। তবে বিদ্যুৎবিভ্রাট এড়ানো যাবে সে ব্যাপারে আস্থা আছে বলেও তিনি দাবি করেন। মূল্য বৃদ্ধির কারণে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান পাইকারি বিদ্যুতের বাজার স্থগিত হওয়ার পর এই আহ্বান জানানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজের। মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দাদের যতটুকু সম্ভব বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। ক্যানবেরায় টিভিতে প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কোনওকিছু কখন চালাবেন সে সম্পর্কে আপনার যদি অন্য কোনও উপায় থাকে তবে সেগুলো ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত চালাবেন না।
কেন এই বিদ্যুৎ সংকট?
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের বৃহত্তম কয়লা এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিকারক দেশ। তবে দেশটি গত মাস থেকে বিদ্যুৎ সংকটে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ এখনও উৎপাদন হয় কয়লার ব্যবহার থেকে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করে কার্বন নিঃসরণ কমাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য দেশটির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ আছে। সমপ্রতি কয়েক সপ্তাহে দেশটি কয়লা সরবরাহে বিঘ্ন, বেশ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিভ্রাট এবং বিশ্বে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাবের মুখে পড়েছে। চলতি বছরের শুরুতে নিউ সাউথ ওয়েলস ও কুইন্সল্যান্ডের বেশকিছু কয়লা খনি বন্যার কবলে পড়ে। তাছাড়া, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে দুটি খনির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে, যেগুলো নিউ সাউথ ওয়েলসের সর্ববৃহৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ করত। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার এক চতুর্থাংশ কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অপ্রত্যাশিত বিভ্রাট এবং রক্ষণাবেক্ষণ কাজের সূচি থাকার কারণে পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে বিশ্বে কয়লা ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী তাদের খরচ বেড়ে যেতে দেখেছে। ওদিকে, কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি উন্মুক্ত হওয়ায় এবং ঠাণ্ডার মধ্যে বিদ্যুৎতের চাহিদাও বেড়েছে। এসব কারণে অস্ট্রেলিয়ার জ্বালানি বাজার নিয়ন্ত্রক পাইকারি বাজারে প্রতি মেগাওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম তিন হাজার অস্ট্রেলীয় ডলারেরও বেশি নির্ধারণ করেছে। তবে কয়েকটি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, বেঁধে দেওয়া এই দাম তাদের উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। ফলে তারা উৎপাদন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যেই বুধবার এইএমও বাজার স্থগিত করার নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নেয়। তারা সরাসরি দাম নির্ধারণ করবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদকদেরকে তাদের ঘাটতির জন্য ক্ষতিপূরণ দেবে বলে জানিয়েছে। একইসঙ্গে নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দাদেরকে সাময়িকভাবে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে তারা। কিন্তু বাজার আবার কখন চালু হবে সে বিষয়ে এইএমও কিছু জানায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ৮৭.৩৩ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধপাকিস্তানে পেট্রোল ২৩৪ রুপি, কেরোসিন ২১১