অস্ট্রেলিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন বদলে দেবে এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য

চীন-মার্কিন স্নায়ুুযুদ্ধ

| সোমবার , ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনের মালিক হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সাথে নতুন নিরাপত্তা চুক্তি করেছে অস্ট্রেলিয়া। এখানে অস্ট্রেলিয়ার কী স্বার্থ কাজ করছে? নাকি এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত হিসেব-নিকেশ আছে? সেই হিসেব-নিকেশকে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এতটাই গুরুত্ব দিচ্ছে যে, শুধু চীনের চোখ রাঙানি উপেক্ষা নয়, তাদের ন্যাটো মিত্র ফ্রান্সকেও ক্ষেপিয়ে তুলতে দ্বিধা করেনি। চুক্তির কথা ঘোষণার আগে শেষ মুহূর্তে ফ্রান্সকে স্তম্ভিত করে অস্ট্রেলিয়া জানায়, তারা ফ্রান্সের কাছ থেকে ১২টি ডিজেলচালিত সাবমেরিন কেনার জন্য করা চার হাজার কোটি ডলারের চুক্তিটি বাতিল করছে। খবর বিবিসি বাংলার। আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপ ও এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা মোড় বদলকারী ঘটনা, যা পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কৌশলগত হিসেব-নিকেশ পাল্টে দেবে। পৃথিবীতে এখন ছয় দেশের হাতে পারমাণবিক সাবমেরিন আছে। এরা হলো যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ভারত। পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন শত্রুপক্ষের চোখ এড়িয়ে গভীর সমুদ্রের নিচে ডুবে থাকতে এবং দ্রুত চলাচল করতে পারে। তার উপস্থিতি চিহ্নিত করা অনেক কঠিন। সাধারণ সাবমেরিনের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, এগুলো ডিজেল বা বৈদ্যুতিক শক্তিচালিত। ডিজেল ইঞ্জিনে জ্বালানি পোড়ানোর জন্য বাতাস দরকার আর ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের জন্য ঘন ঘন রিচার্জ করা দরকার। এ কারণে সবচেয়ে উন্নত ধরনের কনভেনশনাল সাবমেরিনও এক নাগাড়ে কয়েকদিনের বেশি পানির নিচে ডুবে থাকতে পারে না। তাদের জ্বালানির জন্য পানির উপর ভেসে উঠতে হয় বা বাতাস নেওয়ার নলটিকে পানির উপরে ভাসিয়ে রাখতে হয়। ফলে তা শত্রুপক্ষের চোখে ধরা পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অন্যদিকে এখন যেসব পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরি হচ্ছে সেগুলো কোনো রিফুয়েলিং ছাড়াই মাসের পর মাস পানির নিচে থাকতে পারে। এগুলো অনেক বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে এবং তা অনেক দূর পর্যন্ত নিক্ষেপ করতে পারে। সুতরাং পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিনের মালিক হবার পর অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে। তারা অস্ট্রেলিয়ার আশপাশে প্রশান্ত মহাসাগরের বহুদূর পর্যন্ত এলাকায় গোপন নজরদারি ও টহল দিতে পারবে। অস্ট্রেলিয়া মনে করছে, এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব ও হুমকি এতটাই বেড়ে গেছে যে, তা মোকাবিলা করতে হলে ঠিক এই জিনিসটাই তাদের দরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযে কারণে ৯০ বছর গোপন থাকবে প্রিন্স ফিলিপের উইল
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু