অলি-গলিতে জটলা চা দোকানে আড্ডা

৪৭ মামলা, ১৫ হাজার টাকা জরিমানা লকডাউনের পঞ্চম দিন

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৬ জুলাই, ২০২১ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন সফল করতে গতকাল পঞ্চম দিনেও নগরীর সকল গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সতর্কাবস্থায় ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী র‌্যাব পুলিশ বিজিবি ও জেলা প্রশাসন। নগরীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথগুলো থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বিনা প্রয়োজনে লোকজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে ফিরিয়ে দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় বিনা কারণে লোকজনকে ঘর থেকে বের না হতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দেয়া হয়েছে।
তবে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং রাজপথে শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া (পোশাক কারখানার শ্রমিক, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, ডাক্তার-নার্স, গণমাধ্যম কর্মী) মানুষের দেখা মিললেও অলি-গলি-পাড়া-মহল্লায় ছিল অনেকটা ভিন্ন চিত্র। সেখানে মানুষের চলাচল বেড়েছে, সুযোগে-সুযোগে কিছু দোকানও খুলেছে। চায়ের দোকানে আড্ডা এবং জটলাও দেখা গেছে। বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলেছে অলি-গলির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। দোকান খুলতে প্রয়োগ করেছেন নানা কৌশল। বাইরে বন্ধ রেখে ভেতরে করেছেন বেচাকেনা। কেউ কেউ দোকানে তালা লাগিয়ে অবস্থান নিয়েছেন দোকানের আশপাশে। ক্রেতা দেখলেই ছুটে এসে শাটার খুলে শুরু করে দেন ব্যবসা।
বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে দোকান পাট খোলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে ধরা পড়ে ১৫ হাজার ২২০ টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে ৪৭ ব্যবসায়ীকে। দশজন ম্যাজিস্ট্রেট গতকাল নগরীর বিভিন্নস্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন।
অভিযানে এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা জান্নাত নগরীর ডবলমুরিং ও বন্দর এলাকায় ৯ মামলায় মোট ২৬শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। পাহাড়তলী ও আকবরশাহ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। তিনি ২ টি মামলায় ৩শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। অন্যদিকে ইপিজেড ও পতেঙ্গা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সোনিয়া হক, এ সময় তিনি ৩ টি মামলায় ১৩শ’ টাকা টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। পাঁচলাইশ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইনামুল হাছান, এ সময় তিনি ২ টি মামলায় ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। বায়েজিদ ও খুলশী এলাকায় এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৭ টি মামলায় ১ হাজার ৯২০ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এহসান মুরাদ পাঁচলাইশ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৩ টি মামলায় ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। অন্যদিকে সদরঘাট ও ডবলমুরিং এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিবেদিতা চাকমা, তিনি ৫ টি মামলা দায়ের করে ২৪শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। চাদগাঁও এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াসমিন, এ সময় তিনি ২ টি মামলায় ১২শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। পাশাপাশি খুলশী ও বায়েজিদ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১ টি মামলায় মোট ১শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস। এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আফরোজ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৮ টি মামলায় ১৭শ’ টাকা অর্থদন্ড আদায় করেন। চকবাজার ও বাকলিয়ায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত, তিনি ২ টি মামলায় ৪শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরেস্টেুরেন্টে কনে দেখতে এসে গুনল জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধটিসিবির ট্রাকে দীর্ঘ লাইন