অলি আহাদ (১৯৪৮–২০১২)। ভাষা সৈনিক, রাজনীতিবিদ। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ই মার্চ ভাষা আন্দোলনের জন্য তিনি প্রথম কারাগার যাপনকারী। জনাব অলি আহাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুরে ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মরহুম আবদুল ওহাব। অলি আহাদ ছিলেন ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ৪ ঠা জানুয়ারিতে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অন্যতম নেতৃত্বদানকারী সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ই মার্চ ভাষা আন্দোলনের জন্য তিনি প্রথম কারাগার যাপন করেন।
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিকম পরীক্ষায় প্রথম হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকার কারণে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ না দিয়ে চিরতরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে। তিনি ভাষা আন্দোলনে ১৫৪ ধারা ভঙ্গের অন্যতম নায়ক ছিলেন।পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বেই আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর জিয়াউদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. শহীদুল্লাহ্ পাল্টা বাংলা ভাষার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেমের নেতৃত্বে ‘তমদ্দুন মজলিস’ বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার দাবিতে প্রচারাভিযান শুরু করে। আলি আহাদ সহ এরা অনেকেই এে আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী হিসেবে শেখ মুজিবসহ অনেকের সাথে অলি আহাদ কারাবরণ করেন।
তিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। অলি আহাদ তার জীবনের দীর্ঘ ১৯ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। রাজনীতি করেছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে তার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জনাব অলি আহাদকে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০০৪ প্রদান করা হয়। অলি আহাদ ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২০ শে অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।
