অলস পড়ে আছে ৩২২ কোটি টাকার নতুন ১০ রেল ইঞ্জিন

৮ মাস আগে কোরিয়া থেকে আমদানি ।। চুক্তির শর্ত ভঙ্গ ঠিকাদারের

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ এপ্রিল, ২০২১ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ রেলওয়েতে ইঞ্জিন সঙ্কট দীর্ঘদিনের। পূর্বাঞ্চলে সকল আন্তঃনগর, মেইল ও লোকাল ট্রেনে মিটার গেজ ইঞ্জিন সঙ্কট আরও ব্যাপক। কিন্তু এরমধ্যে গত ৮ মাস আগে কোরিয়া থেকে ৩২২ কোটি টাকায় আমদানিকৃত ১০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন পাহাড়তলী রেলওয়ে ডিজেলশপে ৮ মাস ধরে অলস পড়ে আছে। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর কোরিয়া থেকে মিটার গেজে (পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়েতে) চলাচলের জন্য এসব ইঞ্জিন আনা হলেও এখনো তা চালু করা যাচ্ছে না। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ইঞ্জিন আনা হয়নি বলে কমিটির পর কমিটি হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। গত মঙ্গলবার পাহাড়তলী রেলওয়ে ডিজেলশপে গিয়ে দেখা যায়, ৩০০১ থেকে ৩০১০ সিরিয়াল পর্যন্ত ১০টি মিটার গেজ রেলইঞ্জিন কারখানার বিভিন্ন স্থানে অলস পড়ে আছে। ইঞ্জিন সঙ্কটের এই সময়ে ৮ মাস আগে আমদানিকৃত নতুন ১০টি ইঞ্জিন এখনো ব্যবহার করা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন আজাদীকে জানান, ইঞ্জিনগুলো এখনো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আমাদেরকে বুঝিয়ে দেননি। এই কারণে সেগুলো এখনো কারখানায় রয়েছে। ঠিকাদার বুঝিয়ে দেয়ার পর ব্যবহার করা হবে।
এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ থেকে ইঞ্জিন আমদানির পর ট্রায়াল শেষে মাস-দুই মাসের মধ্যে ট্রেনে সংযুক্ত করা হয়। তবে ৮ মাস পরও কেন ১০ ইঞ্জিন রেল লাইনে চালানো হচ্ছে না করার এমন প্রশ্নের জবাবে রেল ভবনের মেকানিক্যাল বিভাগের এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না শর্তে আজাদীকে জানান, ইঞ্জিনগুলো আমদানির ক্ষেত্রে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে। ইঞ্জিনগুলো তৈরিতে যে শর্ত দেয়া হয়েছিল এখানে সেই শর্ত মানা হয়নি। বাংলাদেশ সরকার রেলকে অধিক গতিশীল করার লক্ষ্যে নতুন উচ্চগতি সম্পন্ন ইঞ্জিন এবং কোচ আমদানি করছে। তৈরি করছে নতুন নতুন ডুয়েল গেজ রেল লাইন। যাতে উচ্চগতিতে ট্রেন চালানো যায়। অথচ ইঞ্জিনগুলোর কেনার সময় ঠিকাদারের সাথে যে চুক্তি হয়েছিল আমদানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সেই শর্ত মানেননি। ইঞ্জিনগুলো আমদানির শর্ত ছিল ১২০ থেকে ১৩০ কি.মি. গতির। ইঞ্জিনগুলোতে টিএ-১২ মডেলের অলটারনেটর সংযোজনের কথা ছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে টিএ-৯ মডেলের অলটারনেটর সংযোজন করা হয়েছে, যা পুরনো মডেলের। ফলে ইঞ্জিনের গতি (হর্সপাওয়ার) ও ব্যাকআপ সিস্টেম কম ক্ষমতাসম্পন্ন হবে। এই কারণে ইঞ্জিনগুলো এখনো ব্যবহার করা হচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাহে রমজানের সওগাত
পরবর্তী নিবন্ধকরোনায় কর্মহীন জনগোষ্ঠী : সংকট মোকাবেলায় বড় চ্যালেঞ্জ