‘অলস’ চারটি বাস এখন পরিত্যক্ত

১৭টি মেরামতের জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে চিঠি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২০ অক্টোবর, ২০২১ at ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি) চট্টগ্রাম বাস ডিপো। ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর থেকে নষ্ট অবস্থায় বসে রয়েছে ‘ঢাকামেট্রো-ব-১১-০৬৯৮’ নম্বরের বাসটি। প্রায় ৬ বছর অলস বসে থাকায় একেবারে অকেজো হয়ে পড়েছে বাসটি। দীর্ঘদিন বসে থাকার কারণে সচল যন্ত্রাংশগুলোও অচল হয়ে গেছে। নানা যন্ত্রাংশে ধরেছে মরিচা। ভারতের অশোক লেলেন্ড ব্র্যান্ডের দ্বিতল বাসটি ২০০০ সালে বিআরটিসির বাসের বহরে যুক্ত হয়েছে বলে জানালেন চট্টগ্রাম বাস ডিপোর ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. আবদুল লতিফ।
একই মডেলের ‘ঢাকামেট্রো-ব-১১-০৩৫১’ রয়েছে মরিচায় নষ্ট হওয়া বাসের তালিকায়। সম্প্রতি বাস দুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নিলামে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বিআরটিসি। একইভাবে ২০০১ সালে চায়না থেকে আনা ‘ঢাকামেট্রো-ব-১১-৪৮৯৬’ এবং ‘ঢাকামেট্রো-ব-১১-৪৬৬৬’ নম্বরের বাস দুটিও পরিত্যক্ত তালিকায় যুক্ত হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে বাস দুটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে জানালেন বাস ডিপোর কর্মকর্তারা। পাশাপাশি দুই দফায় ১৭টি বাস মেরামতের জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম বাস ডিপো।
বিআরটিসির সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিআরটিসিতে যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে কোনো বাস কয়েক মাস বসে থাকলে সেটির শনির দশা কাটে না। শুরুতে খুলে নেওয়া হয় টায়ার ও ব্যাটারি। এরপর এসব বাস থেকে একে একে ব্যবহার উপযোগী যন্ত্রাংশগুলো খুলে চলমান বাসগুলোতে সংযোজন করা হয়। একসময় এসব বাস সচল করার সুযোগ থাকে না। এসব বাসকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নিলামের মাধ্যমে নামমাত্রমূল্যে বিক্রি করে দেয় বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ। সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন বাস ডিপোতে পরিত্যক্ত ১৫৩টি গাড়ি নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে বিআরটিসি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বাস ডিপোতেও রয়েছে লক্কড় ঝক্কড় ৭টি বাস। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন ডিপোর গাড়ি হলেও নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় শুধুমাত্র ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে। ঢাকার ধোলাই খালকেন্দ্রিক প্রভাবশালী স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ঢাকায় বসে বাসগুলো নিলামে কম দামে কিনে নেয়।
বিআরটিসি চট্টগ্রাম বাস ডিপোর ম্যানেজার মো. আবদুল লতিফ আজাদীকে বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বাস ডিপোতে ৪টি বাস পরিত্যক্ত তালিকায় রয়েছে। এগুলো যেকোনো সময় নিলামে তুলতে পারে বিআরটিসি। সম্প্রতি চলাচল অনুপযোগী আরও ৭টি বাস নিলামে বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বাস ডিপোতে বেশিরভাগ বাসই চলাচল উপযোগী। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটির জন্য বরাদ্দকৃত বাসগুলো বসে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় চালু হলে বাসগুলো সচল হবে। পাশাপাশি নগরীর স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় ১০টি স্কুল বাস আগের নিয়মে চলাচল করছে।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকটি বাস বসে রয়েছে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে বাসগুলো সারানো হয়নি। এখন দুই দফায় ১৭টি বাস মেরামতের মাধ্যমে সচল করতে বরাদ্দের জন্য প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি ইতোমধ্যে ঠিক করা হয়েছে। অন্যগুলো পর্যায়ক্রমে চলাচল উপযোগী করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঐক্যবদ্ধ থাকার শপথ তৃণমূল নেতাদের
পরবর্তী নিবন্ধআইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগকে স্বর্ণযুগ করেছিলেন মহানবী (দ.)