অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টমসে চলতি ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই–মে) রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬২ হাজার ২৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় লক্ষ্যমাত্রার প্রবৃদ্ধির বেড়েছে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তবে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে প্রবৃদ্ধি কমেছে ১২ দশমিক ১১ শতাংশ। কাস্টমস কর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার তৎপরতায় মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি কমে গেছে। এছাড়া আটককৃত পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কায়ন মূল্যের দ্বিগুণ জরিমানা করা হচ্ছে। ফলে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ইতিবাচক রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অন্যদিকে ডলার সংকটের কারণে অনেক ব্যবসায়ী প্রত্যাশা মতো ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারেনি। এছাড়া সরকারও বিভিন্ন বিলাসী পণ্য আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করে। যার ফলে আমদানিও কিছুটা কমেছে। এর প্রভাবে অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে আছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম কাস্টমসে ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৭ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা, তবে আদায় হয় ৫ হাজার ৪৭২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এছাড়া আগস্ট মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬ হাজার ২৭ কোটি টাকা, আদায় হয় ৫ হাজার ৭১১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭ হাজার ৫০ কোটি টাকা, আদায় হয় ৫ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। অক্টোবর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা, আদায় হয় ৫ হাজার ৬৬১ কোটি ১১ লাখ টাকা। নভেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা, আদায় হয় ৫ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। ডিসেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬ হাজার ৯১০ কোটি টাকা, আদায় হয় ৫ হাজার ১০৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। জানুয়ারি মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা, আদায় হয় ৫ হাজার ৯১৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ফেব্রুয়ারি মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা, আদায় হয় ৪ হাজার ৯১৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। মার্চ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭ হাজার ৯১ কোটি টাকা, আদায় হয় ৫ হাজার ৬৩২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এপ্রিল মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭ হাজার ৭১ কোটি টাকা, আদায় হয় ৫ হাজার ৯৬৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এছাড়া মে মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা, আদায় হয় ৬ হাজার ৫০২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অন্যদিকে চলতি জুন মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭ হাজার ৪৩ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফাইজুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে গত বছরের তুলনায় ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে কাস্টমসের কর্মকর্তাদের দূরদর্শী ও কঠোর নজরদারির কারণে। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি অনেকাংশে কমে গেছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। তবে অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।