সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে। দুটি মামলাতেই আসামি হয়েছেন ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। গতকাল সোমবার তাদের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা হয় বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম। তিনি জানান, দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ ঢাকা জেলা কার্যালয় ১–এ দুটি মামলা করেন। খবর বিডিনিউজের।
দুটি মামলাতেই অভিযোগ একই রকম। বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সীমার অতিরিক্ত খরচ করেছেন দুই ভাই। সেই তথ্য বাংলাদেশের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবিকে জানায়নি ন্যাশনাল ব্যাংক। বরং ব্যাংকের কর্মকর্তারা দুই ভাইয়ের ক্রেডিট লিমিট অবৈধভাবে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। রন হক সিকদার এভাবে সীমার অতিরিক্ত বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫০ কোটি (২০১৭ সালে ডলারের বিপরীতে টাকার মান অনুযায়ী) কোটি টাকা এবং রিক হক সিদকার প্রায় সাড়ে ২১ কোটি টাকা খরচ করেছেন। সেই টাকা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে দুই ভাই ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাইল্যান্ডে থাকা ২০টি ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়। সেই অর্থে পরিশোধ হয় দুই ভাইয়ের ক্রেডিট কার্ডের ঋণ।
দুটি মামলাতেই রন ও রিকের পাশাপাশি ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এঙিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব কার্ড ডিভিশন মো. মাহফুজুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আব্দুল বারী, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ ওয়াদুদ ও এ এস এম বুলবুল এবং সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী মোশতাক আহমেদকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, রন হক শিকদার ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বার বিদেশে গিয়ে ৬১ লাখ ৫২ হাজার ২২৫ ডলার খরচ করেন। অথচ তিনি একবারে সর্বোচ্চ ১২ হাজার করে মোট ৬০ হাজার ডলার খরচ করতে পারতেন। অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ডের লিমিটের অতিরিক্ত ৬০ লাখ ৯২ হাজার ২২৫ ডলার (২০১৭ সালের রেট অনুযায়ী প্রায় ৫০ কোটি টাকা) বিদেশে খরচ করেন। রিক হক সিকদারের ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচ বার বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডে খরচ করেন ২৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৯ ডলার। অথচ তার লিমিট ছিল ৬০ হাজার ডলার। অর্থাৎ তিনি অতিরিক্ত খরচ করেন ২৬ লাখ ২২ হাজার ৪৯৯ ডলার। পরে সই অর্থও বাংলাদেশ থেকে পাচার করে তা দিয়ে কার্ডের ঋণ পরিশোধ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডের ঋণের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে যথাসময়ে সিআইডি ডেটাবেইজে আপলোড করতে হবে। কিন্তু ন্যাশনাল ব্যাংকের হেড অব কার্ড ডিভিশন মাহফুজুর রহমান ২০২০ সাল পর্যন্ত চার বছরেও ক্রেডিট কার্ডের ঋণের তথ্য রিপোর্ট করেননি।